রাতে তাড়াতাড়ি ঘুমানোর উপকারিতা | রাতে দেরিতে ঘুমালে যে সমস্যাগুলো হয় - rate taratari ghumanor upokarita

 সুস্থ থাকার জন্য ঘুম খুবই দরকারি।সঠিক নিয়মে পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুম শরীর সুস্থ রাখে। শরীরে ঘুমের অভাব হলে নানান ধরনের রোগের ঝুঁকি বাড়াই ও স্বাভাবিক কাজকর্ম ব্যাহত হয়ে থাকে। বর্তমানে মানুষ এতটাই কর্ম ব্যস্ত হয়ে গিয়েছে সময় মত ঘুমায় না ও ঘুমের পরিমাণ অনেক কমিয়ে দিয়েছে। আবার অনেকেই আছে সারারাত জেগে ইন্টারনেট চালিয়ে সারাদিন ঘুমিয়ে থাকে। তারা নিজেই জানেন না এতে করে শরীরের কি পরিমাণ ক্ষতি সাধন হচ্ছে। আজকের পোস্টে রাতে তাড়াতাড়ি ঘুমানোর উপকারিতা ও রাতে দেরি করে ঘুমালে কি কি সমস্যা হয় এই বিষয়ে জানানো হবে। তাহলে চলুন দেরি না করে জেনে নেওয়া যাক:-

রাতে তাড়াতাড়ি ঘুমানোর উপকারিতা - রাতে দেরিতে ঘুমালে যে সমস্যাগুলো হয় - rate taratari ghumanor upokarita - NeotericIT.com


রাতে তাড়াতাড়ি ঘুমানোর উপকারিতা - রাতে দেরিতে ঘুমালে যে সমস্যাগুলো হয় - rate taratari ghumanor upokarita - NeotericIT.com

রাতে তাড়াতাড়ি ঘুমানোর উপকারিতা 

রাতে তাড়াতাড়ি ঘুমানো আমাদের শরীরের জন্য অনেক উপকার বয়ে আনে। কেননা রাতে তাড়াতাড়ি ঘুমালে ঘুম খুবই ভালো হয়ে থাকে।তাছাড়া শরীর সকল সময়ে সতেজ ও প্রাণবন্ত থাকে রাতে তাড়াতাড়ি ঘুমালে। রাতে তাড়াতাড়ি ঘুমানোর অসংখ্য স্বাস্থ্য উপকারিতা রয়েছে যা নিচে উল্লেখ করা হলো:-


মানসিক স্বাস্থ্য ভালো থাকে 

রাত দশটা বা তার আগে ঘুমালে মানসিক স্বাস্থ্য অনেক ভালো থাকে। অকারণে স্ট্রেস ও র্দুচিন্তার মতো সমস্যাগুলো সম্মুখীন হতে হয় না। যার ফলে মেজাজ সকল সময় ফুরফুরে থাকে। 



হজমশক্তি বৃদ্ধি পেয়ে থাকে

যারা দ্রুত রাতে ঘুমায় তাদের হজম প্রক্রিয়া অনেক শক্তিশালী হয়ে থাকে। এর ফলে আমরা যে সমস্ত খাবার খাই তা খুব সহজে হজম হয়ে যায় ও ভালো ঘুম হয়ে থাকে। 



ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকে 

রাতে তাড়াতাড়ি ঘুমালে মেটাবলিজম অনেক ভালো থাকে। তাছাড়া ক্যালরি দ্রুত বার্ন হতে শুরু করে ও শরীরের অতিরিক্ত চর্বি ও স্থূলতার মতো সমস্যা গুলো থেকে দূরে থাকা যায়। 



শরীর তরতাজা থাকবে ও ত্বকের সৌন্দর্য বৃদ্ধি পাবে 

রাতে দ্রুত ঘুমালে ত্বক সুস্থ থাকে। আপনি যখন পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুম পাবেন তখন আপনার মুখ পুষ্ঠ ও সতেজ দেখাবে। তাছাড়া চোখের তন্ত্রা ভাব ও মুখে ফোলা ভাব দেখা যায় যার কারণে আরো অনেক সুন্দর লাগে। 


দুর্বলতা দূর হয়ে থাকে

আপনারা যদি নিয়মিত রাত দশটার আগে ঘুমাতে পারেন তাহলে দিনভর ক্লান্তি, ঝিমানো ও দুর্বলতার মত সমস্যাগুলো থেকে শরীরকে অনেক দূরে রাখা যায়। 



সৌন্দর্য বৃদ্ধি পেয়ে থাকে 

দেহের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করার সাথে ঘুমের খুবই নিবিড় সম্পর্ক রয়েছে। আপনি যদি তাড়াতাড়ি ঘুমাতে চান তাহলে সেটা আপনার ত্বকের সৌন্দর্য অনেক বাড়িয়ে দিবে। পরিমিত পরিমাণে না ঘুমালে হাজার যত্নেও ত্বকের সৌন্দর্য বৃদ্ধি পাবে না। তাই দশটার আগে ঘুমালে ত্বকের সৌন্দর্য ঠিক থাকবে। 


বয়সের ছাপ পড়বে না 

রাতে পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুম না হলে  মুখে বলিরেখা পড়ে থাকে ও চোখের নিচে কালো দাগ তৈরি হয়। যার কারনে তরুণ তরুণীদের অনেক বয়স্ক মনে হয়ে থাকে। তাই রাত দশটার আগে ঘুমিয়ে পর্যাপ্ত ঘুমের মাধ্যমে এই সমস্যাটা থেকে পরিত্রাণ পাওয়া সম্ভব হয়। 



কর্ম ক্ষমতা বেড়ে যায় 

মস্তিষ্কের দক্ষতার উপর আমাদের শরীরের কর্মক্ষমতা নির্ভর করে থাকে। মস্তিষ্কের দক্ষতার জন্য আমাদের অবশ্যই প্রয়োজন রাতে পর্যাপ্ত পরিমাণ ঘুমিয়ে ঘুমের অভাব পূরণ করা। তাছাড়া পর্যাপ্ত ঘুম স্মৃতি শক্তি উন্নত করতে সাহায্য করে থাকে। যার ফলে কাজের দক্ষতা অনেক বেড়ে যায়। 


রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায় 

যার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা যত বেশি শক্তিশালী সে তত বেশি সুস্থ থাকবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুমানোর ফলে মানুষের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেক বৃদ্ধি পেয়ে থাকে। কিন্তু যদি রাতে দেরি করে ঘুমান তাহলে শরীর অনেক দুর্বল হয়ে যায় ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ধীরে ধীরে কমতে শুরু করে। 


রাতে দেরিতে ঘুমালে যে সমস্যাগুলো হয়ে থাকে 

রাতে দেরিতে ঘুমালে কি হয় বা রাতে দেরিতে ঘুমালে শরীরের যে সমস্যাগুলো হতে পারে অবশ্যই এই বিষয়ে জানাটা জরুরী। রাতে দেরি করে ঘুমালে আমাদের শরীরে মারাত্মক কিছু ক্ষতি হতে পারে। নিচে রাতে দেরি করে ঘুমালে কি কি সমস্যা হয়ে থাকে তা উল্লেখ করা হলো:-

ব্লাড প্রেসার বাড়তে শুরু করে 

রাতে দেরি করে ঘুমাতে গেলে সেটা শরীর ও মস্তিষ্কের উপর মারাত্মক চাপ সৃষ্টি করে থাকে। যার কারণে ব্লাড প্রেসার অনেক বেড়ে যায়। তাছাড়া কিডনির মারাত্মক ক্ষতি হওয়ার পাশাপাশি, স্ট্রোক ও দৃষ্টি শক্তি কমে যাওয়ার সমস্যার সৃষ্টি হয়। 

স্ট্রেস বৃদ্ধি পায় ও আয়ু কমে 

বর্তমান সময়ের অনেকে ব্যস্ততার কারণে দেরি করে ঘুমাতে যেয়ে থাকেন। কিন্তু অফিসে যাওয়ার জন্য ঘুম থেকে অনেক তাড়াতাড়ি আবার উঠতে হয়।যার ফলে শরীর ও মস্তিষ্কের ওপর মারাত্মক চাঁপ পড়ে থাকে।যার কারণে ব্লাড প্রেসার অনেক অল্প সময়ের মধ্যেই বেড়ে যায়। তাছাড়া কিডনির মারাত্মক ক্ষতি হওয়ার পাশাপাশি স্ট্রোক ও দৃষ্টিশক্তি কমে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। 

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল হয়ে যায় 

অনেকেই রয়েছেন যারা রাত জেগে একটানা একই কাজ করে থাকেন। যার ফলে শরীরে কর্টিজল হরমোনের মতো স্ট্রেস হরমোনের খরন অনেক বেড়ে যায়। তাছাড়া সারারাত কাজ করার ফলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ধীরে ধীরে অনেক কমে যায়। যেহেতু রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাচ্ছে ও স্ট্রেস হরমোন বেড়ে যাচ্ছে তাই হঠাৎ করেই শরীরে অনেক ধরনের রোগের সৃষ্টি হতে পারে। 



ওজন বৃদ্ধি পেয়ে থাকে 

একটানা অনেক দিন রাত জেগে কাজ করলে খাবার ঠিকমতো হজম হতে পারে না। যার ফলে গ্যাস ও অম্বলের প্রকোপ বৃদ্ধি পেয়ে ধীরে ধীরে ওজন বাড়তে শুরু করে। আর ওজন বাড়ার সাথে সাথে সুগার, প্রেসার, ও কোলেস্টেরলের মতো সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। 



মস্তিষ্কের ক্ষমতা কমতে শুরু করে 

সারাদিন কাজ করার পর রাতে মস্তিষ্ক বিশ্রাম নিয়ে থাকে। কিন্তু এই সময়টাতে যদি অতিরিক্ত কাজ করা হয় তাহলে মস্তিষ্কের ক্ষমতা ধীরে ধীরে কমতে শুরু করে। সেই সাথে ডিপ্রেশন,স্মৃতিশক্তি লোপ,হাইপোলার ডিজঅর্ডার, ও অন্যান্য সমস্যাগুলো মাথাচারা দিয়ে উঠে থাকে। 


সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা কমে যায় 

যদি পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুম না হয় তাহলে মস্তিষ্ক সঠিকভাবে কাজ করে না। যার ফলে মস্তিষ্কের বিশেষ কিছু অংশের ক্ষমতা ধীরে ধীরে কমতে শুরু করে। আর এই কারণেই সাধারণত দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা অনেকটা কমে যায়। 



বাবা মা হতে সমস্যা দেখা দিতে পারে 

শরীরের একটি নির্দিষ্ট দেহ ঘড়ি রয়েছে। যদি দেহ করি চলতে কোন ধরনের অসুবিধা হয়ে থাকে তাহলে সেটা শরীরের উপর বিরূপ প্রভাব সৃষ্টি করে। কাজ করার জন্য দিন রয়েছে ও ঘুমানোর জন্য। কিন্তু অনেকেই রাতের বেলা কাজ করে থাকেন ও দিনের বেলা ঘুমিয়ে থাকেন। এর ফলে শরীরে হরমোনের সঠিক কার্যকলাপ বিঘ্নিত হয়ে থাকে। যার ফলে শরীর অনেক ধরনের রোগে আক্রান্ত হতে পারে। 




রাতে ঘুমানোর সঠিক সময় কখন 

ঘুম আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য খুবই অপরিহার্য। সুস্থ থাকার জন্য অবশ্যই রাতে ৮ থেকে ১০ ঘন্টা ঘুম খুবই জরুরী। কিন্তু অনেকেই সঠিক নিয়মে না ঘুমানোর কারণে শরীরের ব্যাপক ক্ষতি করে থাকেন। রাতে তাড়াতাড়ি ঘুমানো ও সকাল বেলা তাড়াতাড়ি ঘুম থেকে ওঠার অনেক স্বাস্থ্য উপকারিতা রয়েছে। অনেক বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের মতে রাতে আটটা থেকে দশটার মধ্যে ঘুমানো খুবই ভালো অভ্যাস হিসেবে বিবেচিত হতে পারে। তাছাড়া এই অভ্যাসটা যদি দীর্ঘদিন পালন করা যাই তাহলে চেহারার লাবণ্যতার পাশাপাশি শরীর সকল সময় তরতাজা ও ফিট থাকবে। 



শেষ কথা, ইতিমধ্যে রাতে তাড়াতাড়ি ঘুমানোর উপকারিতা ও রাতে দেরিতে ঘুমালে কি হয় এই বিষয়ে মোটামুটি ধারণা পেয়ে গিয়েছেন। শরীর সুস্থ ও ফিট রাখার জন্য অবশ্যই রাতে তাড়াতাড়ি ঘুমানোর অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। তাহলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির পাশাপাশি অনেক ধরনের রোগ থেকে শরীর রক্ষা পাবে।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url