লম্বা হওয়ার বৈজ্ঞানিক উপায় | কিভাবে তাড়াতাড়ি লম্বা হওয়া যায় - lomba howar upay
লম্বা ও সুঠাম দেহের অধিকারী হতে সকলেই চাই। অনেকে লম্বা হওয়ার জন্য অনেক পদ্ধতি অনুসরণ করে থাকেন কিন্তু পরিশেষে লম্বা হয়ে উঠতে পারেন না। লম্বা হওয়াটা জিনগত বিষয়ের উপর নির্ভর করে থাকলেও আমরা চাইলে কিছুটা উচ্চতা বাড়িয়ে নিতে পারি প্রাকৃতিক ভাবে।আজকের পোস্টে কিভাবে তাড়াতাড়ি লম্বা হওয়া যায়, লম্বা হওয়ার খাবার তালিকা, লম্বা হওয়ার ব্যায়াম এই নিয়ে জানানোর চেষ্টা করা হবে। তাহলে চলুন দেরি না করে জেনে নেওয়া যাক:-
প্রিয় বন্ধুরা নিওটেরিক আইটির এই আর্টিকেলে আপনি জানতে পারবেন লম্বা হওয়ার বৈজ্ঞানিক উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত ।
কিভাবে তাড়াতাড়ি লম্বা হওয়া যায়। লম্বা হওয়ার বৈজ্ঞানিক উপায়
দ্রুত সময়ের মধ্যে লম্বা হতে চাইলে আপনাকে অবশ্যই স্বাস্থ্যের দিকে বাড়তি নজর দিতে হবে। কেননা শরীর যদি পর্যাপ্ত পরিমাণ পুষ্টি না পাই তাহলে কোনভাবেই দ্রুত সময়ের মধ্যে লম্বা হওয়া সম্ভব নয়। দ্রুত সময়ের মধ্যে লম্বা হওয়ার জন্য আপনারা কিছু টিপস অবলম্বন করতে পারেন:-
- সঠিক ভঙ্গিতে চলাচল করতে হবেঃ দেহের স্বাভাবিক বৃদ্ধির জন্য অবশ্যই সঠিক ভঙ্গিতে চলাচল করার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। হাঁটার সময় অবশ্যই মেরুদন্ড সোজা করে হাঁটার চেষ্টা করতে হবে। এক্ষেত্রে কাধ সমান করে সামনের দিকে তাকিয়ে হাঁটতে হবে। তাছাড়া বসার সময় মেরুদন্ড সোজা করে বসতে হবে।
- প্রতিদিন ৩০ মিনিট ব্যায়াম করুন: শরীরের হাড় ও মাংসপেশী সুগঠিত করার জন্য অবশ্যই প্রতিদিন ৩০ মিনিট করে ব্যায়াম করার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে।নিয়মিত ব্যায়াম করার ফলে শরীর সুস্থ থাকে ও দেহের সঠিক বৃদ্ধিতে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে।
- প্রতিদিন সঠিক সময়ে ঘুমাতে হবে: যত কাজেই থাকুক না কেন প্রতিদিন একই টাইমে ঘুমানোর অভ্যাস করতে হবে। অনেকে আছেন যারা লম্বা হওয়ার জন্য অনেক পদ্ধতি অবলম্বন করে থাকেন কিন্তু সঠিক টাইমে পরিমিত পরিমাণে ঘুমান না।লম্বা হওয়ার জন্য প্রতিদিন ৭ থেকে ৮ ঘণ্টা ঘুমানো জরুরী এবং অবশ্যই আপনাদেরকে রাত দশটার আগে ঘুমাতে যেতে হবে।
- ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ট্যাবলেট গ্রহণ: লম্বা হওয়ার জন্য নিয়মিত সুষম খাবার খাওয়ার পাশাপাশি বিভিন্ন ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ট্যাবলেট খাওয়া যেতে পারে। কেননা এই সকল ট্যাবলেট গুলো দেহের বৃদ্ধিতে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে থাকে। তাই আপনারা চাইলে একজন বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের শরণাপন্ন হয়ে মাল্টিভিটামিন ট্যাবলেট গুলো খেতে পারেন লম্বা হওয়ার জন্য।
তবে লম্বা হওয়ার জন্য আরো কিছু খাবার খেতে হবে নিয়মিত। নিচে লম্বা হওয়ার খাবার তালিকা উল্লেখ করা হলো:-
কি খেলে লম্বা হওয়া যায়। লম্বা হওয়ার খাবার তালিকা
কি খেলে লম্বা হওয়া যায় বা লম্বা হওয়ার খাবার কোনগুলো এই বিষয়ে অনেকেরই প্রশ্ন রয়েছে।যেসব খাবার লম্বা হতে সাহায্য করে থাকে নিচে এরকম কিছু খাবারের তালিকা দেওয়া হলো:-
সামুদ্রিক মাছ: সামুদ্রিক মাছ প্রোটিন ও ভিটামিনের দারুন একটি উৎস। তাছাড়া স্যালমন ও টুনার মত মাছে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ডি ও প্রোটিনের মত উপাদান
ডিম:লম্বা হওয়ার জন্য ডিম দারুন একটি খাবার। কেননা ডিমে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন।যা সাধারণত শরীরের মাংস বেশি গঠন করতে সাহায্য করে। তাই লম্বা হতে চাইলে নিয়মিত ডিম খেতে পারেন।
বাদাম:বাদাম স্বাস্থ্যের জন্য উপযোগী খুবই দারুণ একটি খাবার।এতে রয়েছে ভিটামিন ও প্রোটিন যা আমাদের দেহের জন্য দারুন উপকারি। নিয়মিত বাদাম খাওয়ার ফলে গ্রোথ হরমোন ঠিক থাকে ও লম্বা হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি থাকে।
দুধ: দুধে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম যা হারের গঠন শক্তিশালী করে থাকে। তাই নিয়মিত দুধ খেলে শরীর পর্যাপ্ত পরিমাণে ক্যালসিয়াম পায় ও লম্বা হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেড়ে যায়।
ছোলা: ছোলা আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী একটি উপাদান। এই ধরনের খাবার গুলো শরীরের কোষ বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে থাকে। তাই যারা দ্রুত সময়ের মধ্যে লম্বা হতে চান তারা নিয়মিত ছোলা খাওয়ার অভ্যাস করতে পারেন।
আপেলঃ আপেলের রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার যা হজম শক্তির পাশাপাশি গ্রোথ ঠিক রাখতে সাহায্য করে। তাই খাবার খাওয়ার আধঘন্টা আগে একটা আপেল খেয়ে নিতে পারেন তাহলে লম্বা হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি থাকে।
অ্যাভোকোডা:লম্বা হওয়ার খাবার গুলোর মধ্যে এভোকোডা অন্যতম। দুপুরে খাবারের আগে যদি অর্ধেক এভোকোডা খাওয়া যায় তাহলে শরীর বিভিন্ন পুষ্টি উপাদান পেয়ে থাকে।
সয়াঃ লম্বা হতে চাইলে অবশ্যই সয়াযুক্ত খাবার খেতে হবে। কেননা এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ও ক্যালসিয়ামের উপাদান যা লম্বা হতে সাহায্য করে থাকে।
আরো পড়ুন ঃ কোন ঔষধ খেলে লম্বা হওয়া যায় ?
৫ ৬ ইঞ্চি লম্বা হওয়ার উপায়। Lomba hoyar upay
৫ ৬ ইঞ্চি লম্বা হওয়ার উপায় জানার জন্য অনেকেই গুগলে সার্চ করে থাকেন , লম্বা হওয়ার ক্ষেত্রে ৯০ শতাংশ নির্ভর করে থাকে জিনগত বিষয়ের উপর। তারপরে স্বাস্থ্যসম্মত জীবনধারা ও নিয়মিত শরীর চর্চা ও কিছু অভ্যাসের মাধ্যমে কিছুটা উচ্চতা বাড়ানো সম্ভব।এর জন্য আপনাদেরকে প্রতিদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে ব্যায়াম করতে হবে ও পুষ্টি জাতীয় খাবার খেতে হবে। যেমন খাঁটি গরুর দুধ, দেশি মুরগির ডিম, সবজি। তাছাড়া আপনারা এই সময়টাতে প্রতিদিন যোগ ব্যায়াম করার অভ্যাস গড়ে তুলতে পারেন। কেননা মানসিক স্ট্রেস দূর করে ও লম্বা হওয়ার জন্য গ্রোথ হরমোনের কার্যকারিতা ঠিক রাখে।
২৫ বছর পর লম্বা হওয়ার উপায়
অনেকেই পঁচিশ বছর বয়সের পর উচ্চতা বাড়াতে চান। কিন্তু এটা কোনভাবেই সম্ভব নয়। কেননা ছেলেদের উচ্চতা বাড়ানোর বয়স হচ্ছে ১৮ থেকে ২০ বছর। অর্থাৎ ১৮ বছর পর্যন্ত ছেলেদের উচ্চতা বাড়তে পারে ও ২০ বছর পর্যন্ত সর্বোচ্চ। এর উপরে যখন চলে যাবে তখন হাজার চেষ্টা করলেও উচ্চতা বাড়াতে পারবেনা। তাই এই সময়টাতে উচ্চতা নিয়ে দুশ্চিন্তা না করে অন্যান্য বিষয় গুলোর ব্যাপারে বাড়তি সচেতন থাকতে হবে। স্বাস্থ্যসম্মত জীবন যাপন ও পড়াশোনা করে নিজেকে একজন কর্মঠ মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে হবে লম্বা হওয়ার চেষ্টা না করে।
৭ দিনে লম্বা হওয়ার উপায়
অনেকের মনে প্রশ্ন রয়েছে সাত দিনের লম্বা হওয়ার উপায় বা ৭ দিনে কিভাবে লম্বা হওয়া যায়। সত্যি বলতে সাত দিনের লম্বা হওয়ার কোন উপায় নেই কিন্তু আপনি চাইলে নিচের টিপস গুলো ফলো করে খুবই দ্রুত সময়ের মধ্যে লম্বা হওয়া যাবে:-
রোদে হাঁটার অভ্যাস করতে হবে:দেহের হাড় বিকশিত ও সুঠাম হওয়ার জন্য অবশ্যই রোদে হাঁটার প্রয়োজন রয়েছে। কেননা রোদে হাঁটলে সরাসরি সূর্যের আলো পাবেন যার মাধ্যমে শরীর ভিটামিন ডি পাবে ও হাড়ের সঠিক বৃদ্ধি হবে। তবে এটার জন্য অবশ্যই সকাল দশটার আগে রোদে হাঁটতে হবে। তাই লম্বা হওয়ার জন্য অবশ্যই দৈনিক ২০ থেকে ৩০ মিনিট রোদে হাটার অভ্যাস তৈরি করতে হবে।
নিয়মিত ব্যায়াম করতে হবেঃযারা দ্রুত সময়ের মধ্যে লম্বা হতে চান কিন্তু ব্যায়াম করতে চান না তাদের স্বপ্ন কখনো বাস্তবে পরিণত হবে না। প্রতিদিন নির্দিষ্ট একটি সময়ে লম্বা হওয়ার জন্য আপনাদেরকে ব্যায়াম করতে হবে। বিশেষ করে লম্বা হওয়ার ক্ষেত্রে ভার উত্তোলনের ব্যায়ামগুলো দারুন কাজ করে থাকে।
স্ট্রেস মুক্ত থাকতে হবেঃ অনেকে বিভিন্ন উপায়ে অবলম্বন করে যখন লম্বা হতে পারেন না তখন অনেক চিন্তা করে থাকেন। চিন্তা বা স্ট্রেস আপনার লম্বা হওয়ার পথে একটি বড় বাঁধা হতে পারে। তাই সকল সময় চিন্তামুক্ত থাকতে হবে নাহলে স্ট্রেস বা মানসিক চাপ বেড়ে গেলে লম্বা হওয়া সম্ভব হবে না।
পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুমাতে হবেঃলম্বা হওয়ার জন্য অবশ্যই আমাদের পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুমাতে হবে। সুস্থ থাকার জন্য একজন প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তির প্রতিদিন ৭ থেকে ৮ ঘন্টা ঘুমানো উচিত। সাত থেকে আট ঘন্টা ঘুমানোর ফলে দেহের স্বাভাবিক কার্য সঠিকভাবে হয়ে থাকে। যা সাধারণত লম্বা হওয়ার ক্ষেত্রে দারুণ ভূমিকা পালন করে থাকে। তাই দ্রুত সময়ের মধ্যে লম্বা হতে চাইলে অবশ্যই সাত থেকে আট ঘন্টা ঘুমানোর অভ্যাস করতে হবে।
খাদ্য অভ্যাসের ধারা বজায় রাখতে হবে:লম্বা হওয়ার জন্য দৈনন্দৈন খাদ্য তালিকায় অবশ্যই সুষম ও পুষ্টিকর খাবার রাখতে হবে। খাদ্য তালিকায় যদি সুষম ও পুষ্টিকর খাবার না রাখতে পারেন তাহলে হাজার চেষ্টা করেও লম্বা হতে পারবেন না। অর্থাৎ যেসব সব খাদ্যে ছয়টি পুষ্টি উপাদান বিদ্যমান সেসব খাবার খাওয়ার চেষ্টা করুন।
এই কয়েকটি অবলম্বন করলে খুব সহজেই লম্বা হয়ে উঠতে পারবেন। তবে এর জন্য আপনাদেরকে অবশ্যই ধূমপান বা মদ্যপানের অভ্যাস থাকলে সেটা ত্যাগ করতে হবে।
লম্বা হওয়ার ব্যায়াম। ৬ ফুট লম্বা হওয়ার উপায়
লম্বা হওয়ার জন্য কিছু ব্যায়াম রয়েছে যেগুলো করলে খুবই দ্রুত সময়ের মধ্যে লম্বা হওয়া যায়। আপনারা লম্বা হওয়ার জন্য সহজ কিছু ব্যায়াম করতে পারেন। লম্বা হওয়ার জন্য সাঁতার কাটা ও দড়ি লাফানো যেতে পারে। তাছাড়া সাইকেল চালালেও লম্বা হওয়া যায়। তাছাড়া লম্বা হওয়ার জন্য অনেকে সাইকেলের ছিট উঁচু নিচু করে পিঠে টান করে ব্যায়াম করে থাকেন।অনেকের লম্বা হওয়ার জন্য বালা ঝোলা সহ অনেক ধরনের ব্যায়াম করে থাকেন।
আরো পড়ুন ঃ লম্বা হওয়ার ব্যায়াম ছবি সহ
মেয়েদের লম্বা হওয়ার উপায়
পুরুষের মতো মেয়েরা অনেকে লম্বা হতে চাই। মেয়েদের লম্বা হওয়ার জন্য সুষম খাবার খাওয়ার পাশাপাশি, পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুম, নিয়মিত দড়ি লাফানো এগুলো করা যেতে পারে। এই অভ্যাসগুলো যদি ১৪ থেকে ২২ বছরের মধ্যে করতে পারেন তাহলে লম্বা হওয়া সম্ভব ।
শেষ কথা, ইতিমধ্যে লম্বা হওয়ার বৈজ্ঞানিক উপায় বা কিভাবে তাড়াতাড়ি লম্বা হওয়া যায় এই বিষয়ে ধারণা পেয়ে গিয়েছেন। এই উপায় গুলোর মাধ্যমে হয়তো আপনি সবথেকে দশ দিনের মধ্যে লম্বা হতে পারবেন না তবে ধীরে ধীরে চাইলে লম্বা হয়ে উঠতে পারবেন। তারপরেও যদি এই নিয়ে কোন ধরনের প্রশ্ন থাকে বা পোস্টটি পড়ে কোন বিষয় সম্পর্কে বুঝতে কোন ধরনের অসুবিধা হয়ে থাকে তাহলে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন। ধন্যবাদ।