অনলাইনে জিডি করার নিয়ম ২০২৩ - online gd
অনলাইনে জিডি করার নিয়ম ২০২৩ - online gd.
আচ্ছালামু আলাইকুম প্রিয় অতিথি - নিওটেরিক আইটি থেকে আপনাকে স্বাগতম । আপনি নিশ্চয় অনলাইনে জিডি করার নিয়ম ২০২৩ - online gd সম্পর্কিত তথ্যের জন্য নিওটেরিক আইটিতে এসেছেন । আজকে আমি অনলাইনে জিডি করার নিয়ম ২০২৩ - online gd নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করে এই আর্টিকেল সম্পন্ন করব । অনলাইনে জিডি করার নিয়ম ২০২৩ - online gd সম্পর্কে আরো জানতে গুগলে সার্চ করুন - অনলাইনে জিডি করার নিয়ম ২০২৩ - online gd লিখে অথবা NeotericIT.com এ ভিসিট করুন । মোবাইল ভার্সনে আমাদের আর্টিকেল পড়ুন । এই আর্টিকেলের মূল বিষয় বস্তু সম্পর্কে জানতে পেইজ সূচি তালিকা দেখুন। ওয়েব স্টোরি দেখুন
সরকারি সেবার প্রায় সবগুলোই এখন অনলাইনে সম্পন্ন করে ফেলা যায় ঘরে বসেই। তারমধ্যে বর্তমানে বাংলাদেশ সরকার এখন থানায় জিডি বা ডায়েরী করার ব্যাপারটাও অনলাইনে নিয়ে এসেছে। এটার জন্য অ্যাপ বা ওয়েবসাইট যেকোনো মাধ্যমেই করা যাবে। আজকে আমি অনলাইনে জিডি করার নিয়ম নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করবো।
জিডি করা নিয়ে অনেকেরই মনে ভয়ভীতি কাজ করে কারণ হাজার হোক আইনী কাজ কারবার। তাছাড়া পুলিশ নিয়ে বাংলাদেশের মানুষের ভয়ের শেষ নেই। এছাড়া অভিজ্ঞতা না থাকার মতো সমস্যা তো আছেই। তো চলুন জেনে নেওয়া যাক অনলাইনে কিভাবে জিডি করবেন এবং এই বিষয়ে আরো অন্যান্য সমস্যার সমাধান নিয়ে বিস্তারিত।
অনলাইনে জিডি করার নিয়ম ২০২৩:
প্রথমেই চলুন জিডি নিয়ে অল্পবিস্তর জেনে নিই তাহলে অনলাইনে জিডি করা নিয়ে বুঝতে সুবিধা হবে।
জিডি কি?
জিডি হলো জেনারেল ডায়েরীর (General Diary) সংক্ষিপ্ত রুপ। দেশের প্রতিটি পুলিশ থানায় এবং ফাঁড়িতে একটি ডায়েরীতে ২৪ ঘন্টার খবর রেকর্ড করা হয়। নিয়মঅনুযায়ী প্রতিদিন সকাল আটটায় ডায়েরী খোলা হয় এবং পরের দিন সকাল আটটায় ডায়েরী বন্ধ করা হয়। প্রকৃতপক্ষে কার্যত এটি কখনই বন্ধ হয় না। এই ডায়েরীতে থানার বিভিন্ন কার্যক্রম যেমন আসামী কোর্টে চালান দেয়া, এলাকার বিভিন্ন তথ্য, থানার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের থানায় ঢোকা এবং বের হওয়ার যাবতীয় তথ্য লিপিবদ্ধ থাকে।
জিডি কেন করা হয়:
একেকজন মানুষের কাছে জিডির গুরুত্ব একেকরকম। থানায় মামলাযোগ্য নয় এমন ঘটনা ঘটলে মানুষ থানায় জিডি করে থাকে। আবার কাউকে ভয় ভীতি দেখানো হলে বা অন্য কোন কারণে যদি একজন মানুষ নিরাপত্তার অভাব বোধ করেন কিংবা কোন ধরনের অপরাধের আশঙ্কা করেন তাহলেও তিনি জিডি করতে পারেন। এছাড়াও যেকোনো প্রয়োজনীয় কাগজপত্র, পাসপোর্ট, পরিচয়পত্র, চেকবই বা গুরুত্বপূর্ণ দলিল হারানো; বখাটে, মাদকসেবী বা অপরাধীদের আড্ডা-সংক্রান্ত তথ্য; জনশৃঙ্খলা বিঘ্নিত হতে পারে এমন অবৈধ সমাবেশ; গৃহকর্মী, দারোয়ান, নৈশপ্রহরী নিয়োগ বা পালিয়ে যাওয়া; নতুন বা পুরনো ভাড়াটে সংক্রান্ত তথ্য এবং প্রবাসীদের বিভিন্ন সমস্যা সংক্রান্ত অভিযোগে থানায় যে কেউ জিডি করতে পারেন। জিডি বা ডায়েরী করার পর পুলিশ প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিয়ে থাকে। প্রয়োজনে তদন্ত করা, নিরাপত্তা দেয়া ছাড়াও জিডির বিষয়টি মামলাযোগ্য হলে পুলিশ মামলা করে থাকে। আইনগত সহায়তা পাওয়ার জন্য জিডি অনেক গুরুত্বপূর্ণ। অনেক সময় আদালতেও জিডিকে সাক্ষ্য হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
অনলাইনে জিডি করার জন্য কি কি প্রয়োজন?
অনলাইনে পুলিশের কাছে অভিযোগ করার ক্ষেত্রে অর্থ্যাৎ জিডি করার ক্ষেত্রে খুব বেশি কিছু লাগবে না। ওয়েব পোর্টাল বা মোবাইল অ্যাপস ব্যবহার করে প্রথমে আপনাকে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে। এর জন্য যা যা প্রয়োজন তা হলো:
- আপনার জাতীয় পরিচয় পত্র বা ভোটার আইডি নাম্বার/ জন্ম সনদ নাম্বার কিংবা পাসপোর্ট নাম্বার প্রয়োজন হবে।
- একটি সচল মোবাইল নাম্বার
- আপনার ছবি।
অনলাইনে জিডি করার সুবিধা কি?
বর্তমানে থানায় গিয়ে জিডি করার চাইতে অনলাইনে যেকোনো জায়গা থেকে জিডি করা অধিক সুবিধাজনক। আমরা বাংলাদেশ পুলিশের মোবাইল অ্যাপস বা ওয়েব পোর্টালের মাধ্যমে খুব সহজে জিডি করতে পারি। অনলাইনে জিডি করার সবচেয়ে বড় সুবিধা হচ্ছে, খুব সহজে যেকোনো স্থান থেকে আপনি আপনার অভিযোগ পুলিশকে জানাতে পারবেন। অভিযোগ এর সর্বশেষ অবস্থা জানতে পারবেন অর্থ্যাৎ ট্র্যাক করতে পারবেন। আপনার অভিযোগের তদন্তকারী অফিসার এর সাথে অনলাইনে যোগাযোগ করতে পারবেন এবং অনলাইনে আপনার অভিযোগ ডাউনলোড সহ ডিজিটাল কপি যে কাউকে পাঠাতে পারবেন।
জেনে নিন কীভাবে অফলাইন ও অনলাইনে জিডি করবেন:
অফলাইনে জিডি করার নিয়ম বা থানায় গিয়ে জিডি করার নিয়ম:
থানায় গিয়ে আপনি জিডি করতে পারেন। থানার ডিউটি অফিসার জিডি নথিভুক্ত করেন। এক্ষেত্রে তিনি একটি ডায়েরীতে জিডির নম্বরসহ বিভিন্ন তথ্য লিপিবদ্ধ করেন। জিডির দুটি কপি করা হয়। একটি থানায় সংরক্ষণ করা হয় এবং অন্যটিতে জিডির নম্বর লিখে প্রয়োজনীয় সাক্ষর ও সীলমোহর দেয়া হয়। এটি ভবিষ্যতের জন্য সংরক্ষণ করতে হয়।প্রতিটি জিডির জন্য একটি নম্বর দেয়া হয়, তাই কোন অবৈধ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে কেউ আগের তারিখ দেখিয়ে জিডি করতে পারেন না।
অভিযোগকারী নিজের হাতে জিডি লিখতে পারেন, আবার প্রয়োজনে থানার কর্মকর্তাও লিখে দিয়ে থাকেন।
এবার ধরুন আপনার কিছু হারিয়ে গেলো এক্ষেত্রে জিডিটা কিরকম হবে তার একটা নমুনা নিচে দেয়া হলো। মোবাইল ফোনের সিম, পরীক্ষার সার্টিফিকেট, জমির দলিল প্রভৃতি হারিয়ে গেলে ঐ সব কাগজপত্র পুনরায় তুলতে গেলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ হারানো সংবাদের জিডি চেয়ে থাকে, তাই ঐসব ক্ষেত্রে হারানো সংবাদের জিডি করে সেই জিডি নম্বরসহ কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করতে হয়।
এখানে সার্টিফিকেট হারানোর জিডির নমুনা দিয়ে দেখানো হলো:
বরাবর
ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা
………. থানা
চট্টগ্রাম।
বিষয়: এসএসসি সার্টিফিকেট হারানো সংবাদ ডায়েরীভুক্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আবেদন।
মহোদয়,
আমি নিম্ন সাক্ষরকারী আপনার থানায় উপস্থিত হয়ে লিখিতভাবে জানাচ্ছি যে, আমার এসএসসি পরীক্ষার সার্টিফিকেট আজ সকাল আনুমানিক ১১ টার সময় ঢাকা কলেজের পাশের রাস্তার একটি ফটোকপি করার দোকান থেকে হারিয়ে গেছে।
এমতাবস্থায় হারানোর বিষয়টি ডায়েরীভুক্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবার জন্য অনুরোধ জানাচ্ছি।
সার্টিফিকেটের বিবরণ:
পরীক্ষার নাম…শিক্ষাবর্ষ…রেজিষ্ট্রেশন নং… রোল নং…
দাখিলকারীর নাম…
ঠিকানা…
ফোন…
ঘরে বসে অনলাইনে জিডি করার নিয়ম:
শুধু ঘরে বসে না দেশের যেকোনো জায়গা থেকে আপনি সহজেই জিডি করতে পারবেন অনলাইনে। এর জন্য দুটো পদ্ধতি আছে একটা হলো ওয়েবসাইটে গিয়ে আর অন্যটা হলো মোবাইল অ্যাপ ব্যবহার করে। এখানে আমি দুটো পদ্ধতিতেই জিডি করার নিয়ম দেখিয়ে দিচ্ছি।
Online GD ওয়েবসাইট ব্যবহার করে কিভাবে জিডি করবেন?
প্রথমে আপনাকে যেকোনো ইন্টারনেট ব্রাউজার ওপেন করে http://gd.police.gov.bd এই লিঙ্কে প্রবেশ করুন।
- প্রথমেই উপরের মেনু থেকে রেজিস্ট্রেশন বাটন ক্লিক করুন।
- এবার আপনার জাতীয় পরিচয় পত্র নম্বর অথবা জন্ম সনদপত্র নাম্বার কিংবা পাসপোর্ট নাম্বার লিখুন।
- এরপর আপনার বর্তমান ঠিকানা লিখুন।
- এবার আপনার লাইভ ছবি তুলতে হবে।
- তারপর আপনার সচল মোবাইল নাম্বার দিতে হবে পরবর্তীতে এই নাম্বারটাই ইউজার নাম হিসেবে ব্যবহার করতে হবে এবং ইমেইল (যদি থাকে) ও পাসওয়ার্ড প্রদান করুন।
- আপনার পরিচয় নিশ্চিত করার জন্য এসএমএস এর মাধ্যমে একটি ওটিপি কোড আপনার দেওয়া মোবাইল নাম্বারে পাঠানো হবে। ওটিপি কোডটি যথাস্থানে সঠিকভাবে লিখুন। এবার আপনার রেজিস্ট্রেশন সম্পূর্ণ হবে।
রেজিস্ট্রেশন সঠিকভাবে সম্পূর্ণ হলে লগইন পেজে ইউজারের ঘরে আপনার দেওয়া মোবাইল নাম্বার এবং পূর্বে প্রদানকৃত পাসওয়ার্ড দিয়ে লগইন করুন।
অনলাইন জিডি অ্যাপ্লিকেশন এ গেলে আপনি বেশ কিছু অপশন দেখতে পাবেন। অভিযোগ করার ক্ষেত্রে অভিযোগের ধরণ এবং আপনার কি হারিয়েছে অথবা কি খুঁজে পেয়েছেন তা নির্বাচন করুন এবং কোন জেলায় কোন থানায় জিডি করতে চান তা নির্বাচন করে ঘটনার সময় ও স্থান লিখে "পরবর্তী" ধাপ বাটনে ক্লিক করুন।
এবার আপনার বর্তমান ঠিকানা ও ঘটনা সম্পর্কে আরো বিস্তারিত লিখুন। অভিযোগ সম্পর্কিত কোনো ডকুমেন্ট থাকলে সেগুলো যুক্ত করুন এবং সাবমিট বাটনে ক্লিক করে জমা দিন। ফরম পূরণ এ কোন সমস্যা হলে তা এডিট বাটনে ক্লিক করে সমাধান করুন।
সবকিছু ঠিক থাকলে সাবমিট বাটন ক্লিক করে অভিযোগটি জমা দিন। আবেদন সম্পন্ন হলে পরবর্তীতে লগইন করে আপনি আপনার অভিযোগ এর সর্বশেষ অবস্থা জানতে পারবেন।
মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে জিডি করার নিয়ম:
অনলাইন জিডির ওয়েবসাইটের মোবাইল ভার্সন হলো অনলাইন জিডি মোবাইল অ্যাপ। মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে জিডি করতে চাইলে প্রথমে প্লে স্টোর থেকে অনলাইন জিডি মোবাইল অ্যাপটি ইন্সটল করুন। Online GD মোবাইল অ্যাপের প্লে-স্টোর লিংকঃ https://play.google.com/store/apps/details?id=com.opus_bd.lostandfound
প্রথমেই আপনাকে রেজিস্ট্রেশান করতে হবে। আপনি যদি অনলাইনে এরমধ্যে রেজিস্ট্রেশান করে থাকেন, তাহলে মোবাইল নাম্বার এবং পাসওয়ার্ড দিয়ে লগইন করুন। আর যদি রেজিস্ট্রেশন না করে থাকেন, তাহলে নিবন্ধন বাটনে ক্লিক করে রেজিস্ট্রেশান সম্পন্ন করুন।
আমরা ওয়েবসাইটে যেভাবে রেজিস্ট্রেশন করেছি ঠিক একইভাবে মোবাইল অ্যাপে নিবন্ধন করতে হবে। এরপর লগইন করে একই নিয়মে অভিযোগ পত্র জমা দিতে হবে।
তো এই ছিলো অনলাইনে জিডি করার নিয়ম নিয়ে আমাদের বিস্তারিত আলোচনা আশা করছি আপনাদের সঠিকভাবে জানাতে পেরেছি। এই নিয়ে আর কোনো প্রশ্ন থাকলে আমাদের কমেন্টবক্স তো আছেই।
আপনি আসলেই নিওটেরিক আইটির একজন মূল্যবান পাঠক । অনলাইনে জিডি করার নিয়ম ২০২৩ - online gd এর আর্টিকেলটি সম্পন্ন পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ ধন্যবাদ । এই আর্টিকেলটি পড়ে আপনার কেমন লেগেছে তা অবস্যয় আমাদের কমেন্ট করে জানাবেন । মানুষ হিসেবে না বুঝে কিছু ভুল করতেই পারি , তাই ভুল ত্রুটি ক্ষমা করবেন এবং কমেন্ট করে জানাবেন ।
দয়া করে নীতিমালা মেনে মন্তব্য করুন - অন্যথায় আপনার মন্তব্য গ্রহণ করা হবে না ।
comment url