কন্টেন্ট রাইটিং শেখার উপায় । কন্টেন্ট রাইটিং এর নিয়ম - content writing shikhar upay
বলা হয় যে “Content is the King” আসলেই বর্তমান যুগে একটি ব্যবসায় দাড় করানো বা অন্য যেকোনো ক্ষেত্রেই কনটেন্টের বিকল্প কিছুই নেই। সব কন্টেন্টের পর। কন্টেন্ট শব্দটির সাথে আমরা সবাই মোটামুটি পরিচিত। একেবারেই কিছু না জানলেও কন্টেন্ট আমরা প্রতিদিন দেখি, শুনি, পড়ি। উদাহরণস্বরুপ আপনি এখন আমার যে লেখাটা পড়ছেন এটাও কনটেন্ট এর মধ্যে পরে। ইন্টারনেটের এ যুগে কন্টেন্টের চাহিদা ব্যাপক। ইনকামের একটি বড় মাধ্যম হিসেবে দাঁড়িয়েছে কন্টেন্ট। বর্তমানে বিভিন্ন ছোট বড় অনেক কোম্পানি বা ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গুলো তাদের প্রোডাক্ট বা সার্ভিস গুলো অনলাইনে প্রচার করার জন্যও একেকভাবে একেকপ্রকার কন্টেন্ট ব্যবহার করে থাকে।
আজ আমরা আলোচনা করবো আমরা কন্টেন্ট কি, কন্টেন্ট রাইটিং কি, কন্টেন্ট রাইটার কাকে বলে, কন্টেন্ট কত ধরনের হয়, কন্টেন্ট লিখে আয় করা সম্ভব কিনা। তাছাড়াও এই আর্টিকেলটি পড়ার পর খুব সহজেই কিভাবে কন্টেন্ট রাইটিং করে ইনকাম করা যায় তাও শিখতে পারবো। তো চলুন মূল আলোচনায় যাওয়া যাক। আজকের নিওটেরিক আইটির এই আর্টিকেলের মাধ্য.মে আপনারা কন্টেন্ট রাইটিং শেখার উপায় সম্পর্কে পরিপুর্ন একটা ধারনা নিতে পারবেন ।
কন্টেন্ট রাইটিং শেখার উপায়, কীভাবে কন্টেন্ট রাইটিং শুরু করবো?
প্রথমে কন্টেন্ট নিয়ে বিস্তারিত জেনে নিই। কারণ অল্পবিদ্যা ভয়ঙ্করী!
কন্টেন্ট কি?
সাধারণত আমরা সোশাল মিডিয়া বা ইন্টারনেটে যে বিভিন্ন ছোট বড় গল্প, ছবি, অডিও, ভিডিও ইত্যাদি দেখি, শুনি, বা পড়ি সবই মূলত কন্টেন্ট। কন্টেন্ট একটি ইংরেজি শব্দ, যার বাংলা অর্থ হচ্ছে বিষয়বস্তু। সহজভাবে বলতে গেলে কন্টেন্ট বা বিষয়বস্তু হচ্ছে এমন কিছু মাধ্যম যা দিয়ে কোন বিষয়কে সুন্দরভাবে প্রকাশ করা যায় বা বিস্তারিত বর্ণনা করা যায়। তাছাড়া কন্টেন্ট হচ্ছে নিজের সৃজনশীলতা প্রকাশ করার সুন্দর একটি মাধ্যম।কন্টেন্ট রাইটিং কি?
কন্টেন্ট রাইটিং (Content Writing) হলো কোনো একটি বিষয়কে সুন্দরভাবে বর্ণনা করে সহজ লেখার মাধ্যমে সুন্দরভাবে উপস্থাপন করা যেটা পড়ে যে কেউ কোনকিছু সম্পর্কে খুব সহজেই জানতে পারবে। সেটা যেকোনো বিষয়ের উপরেই হতে পারে। আমাদের কোনো বিষয় সম্পর্কে জানতে হলে গুগলে সার্চ করার পর যে আর্টিকেল বা লেখা গুলো আমাদের সামনে আসে এবং আমরা আমাদের সঠিক তথ্যটি খুঁজে পাই সেগুলো হলো একেকটা কন্টেন্ট আর কন্টেন্ট লেখাই হলো কনটেন্ট রাইটিং। সহজ কথায় বলতে গেলে কন্টেন্ট রাইটিং হচ্ছে লেখার মাধ্যমে সুন্দরভাবে এক বা একাধিক বিষয়ের উপর তথ্য পাঠকের সামনে উপস্থাপন করা।কন্টেন্ট কত প্রকার?
কন্টেন্ট প্রধানত চার প্রকার:- টেক্সট কন্টেন্ট
- অডিও কন্টেন্ট
- ভিডিও কন্টেন্ট
- ইমেজ কন্টেন্ট
কোন ধরনের লেখা যা পাঠ করা যায় তাকে টেক্সট কন্টেন্ট বলে। যেমন, ব্লগ পোস্ট, নিউজপেপার, বইপত্র ইত্যাদি হলো টেক্সট কন্টেন্ট।
যখন কোন শব্দ, সুর কিংবা কথা বলে সেটা রেকর্ড অথবা সরাসরি প্রচার করে তখন সেটাকে অডিও কন্টেন্ট বলে। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, মিউজিক প্লেয়ারে আমরা যেসব অডিও শুনি, রেডিওতে প্রচারিত কোন ইভেন্ট বা প্রোগ্রাম শুনি এগুলো হলো অডিও কন্টেন্ট।
যখন কোন ক্যামেরা অথবা কোন সফটওয়্যার ব্যবহার করে চলমান চিত্র ধারণ করে প্রকাশ করা হয় তখন সেটাকে ভিডিও কন্টেন্ট বলে। যেমন, ইউটিউবে আমরা যেসব ভিডিও দেখি, কিংবা টিভিতে বা সিনেমা হলে যা কিছু দেখি তার সবই হলো ভিডিও কন্টেন্ট।
যখন কোন বিষয়কে চিত্রের মাধ্যমে প্রকাশ করা হয় তখন সেটাকে ইমেজ কন্টেন্ট বলা হয়। যেমন, ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম ইত্যাদি স্যোশাল মিডিয়ায় যেসব ছবি দেখেন সেগুলো ইমেজ কন্টেন্ট। ইমেজ কন্টেন্টের বৈশিষ্ট্য হলো চিত্রের মধ্যে এমন কোন মেসেজ থাকতে হবে যা দ্বারা কোন কিছুকে নির্দেশ করে।
- Vloging কন্টেন্ট
- পত্রিকায় ম্যাগাজিন লিখা
- কোনো বইয়ের
- রিভিউ নিয়ে কন্টেন্ট
- কোনো ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের পণ্যের বিবরণ দিয়ে লিখিত কন্টেন্ট
- কোনো ভিডিওর স্ক্রিপ্ট নিয়ে কন্টেন্ট
- ইউটিউবের ভিডিওর ডেস্ক্রিপশনের বর্ণনাও এক ধরনের কন্টেন্ট।
কন্টেন্ট রাইটিং এর নিয়ম, কিভাবে কন্টেন্ট রাইটিং শিখবেন?
এই পর্বে আপনি জানতে পারবেন কন্টেন্ট রাইটিং এর নিয়ম । কন্টেন্ট রাইটিং শিখতে চাইলে বা কন্টেন্ট রাইটার হতে চাইলে যে বিষটিকে প্রাধান্য দিতে হবে সেটা হলো চর্চা বা প্র্যাকটিস। নিয়মিত চর্চা না করলে আপনি কন্টেন্ট রাইটার হতে পারবেন না। কারণ, Practice Makes a Man Perfect. এক্ষেত্রে আপনাকে কিছু বিষয় অনুশীলন করতে হবে সেগুলো হলো:
পড়া:
পড়ার কোনো বিকল্প নেই। যতই পড়বেন ততই জানবেন সাথে সাথে শিখবেন। কন্টেন্ট লিখতে চাইলে আপনাকে প্রচুর পরিমাণ পড়তে হবে। আপনি যতো বেশি পড়বেন, ততো বেশি আপনার ধারণা পাবেন যে কিভাবে লিখবেন। তাই আপনার জন্য লেখা সহজ হয়ে যাবে। আপনি যে বিষয়ে লিখতে চান সে বিষয়ক বই, নিবন্ধ, ব্লগ পোস্ট ইত্যাদি পড়তে হবে প্রতিনিয়ত। লেখার চেয়ে পড়ুন বেশি। তাহলে আপনার জন্য কন্টেন্ট তৈরি করা সহজ হবে।লেখা:
আপনাকে প্রতিদিন কিছু না কিছু লিখতে হবে। প্রথম প্রথম হয়তো আপনার লেখা ভালো হবে না কিংবা বেশি লিখতে পারবেন না, তবুও লিখতে হবে। লেখার জন্য আপনি প্রথমে সহজ টপিকগুলো নিয়ে লিখতে পারেন, যেমন, নিজের সম্পর্কে, পরিবার সম্পর্কে, প্রিয় বন্ধু ইত্যাদি সহজ টপিকের উপর লেখা শুরু করতে পারেন। প্রথম এক মাস ১০০ শব্দের আর্টিকেল লিখবেন, পরবর্তী মাসে ২০০ শব্দ, পরের মাসে ৫০০ শব্দ এভাবে ধীরে ধীরে শব্দ সংখ্যা বাড়াবেন। এভাবে চর্চা চালিয়ে গেলে এক সময় দেখতে পারবেন, আপনি খুব সহজেই ২০০০ শব্দের আর্টিকেল লিখতে পারছেন।রিসার্চ:
কোন বিষয়ে লেখার আগে সেটা নিয়ে রিসার্স করে নিবেন। বিভিন্ন ব্লগপোষ্ট, উইকিপিডিয়া, বই, সংবাদপত্র ইত্যাদি ঘেঁটে আসল তথ্য জেনে নিবেন। নিজের চিন্তা শক্তি ব্যবহার করে যাচাই বাছাই করবেন, কোন তথ্য সঠিক আর কোন তথ্য ভুল। এভাবে রিসার্স করে আর্টিকেল লিখবেন।কীভাবে কন্টেন্ট রাইটিং করে আয় করা যায়?
কন্টেন্ট লিখে কী সত্যিই ইনকাম করা যায়? হ্যাঁ, যায়। প্রথমেই আমরা বলেছি যে বর্তমানে কন্টেন্ট ইনকামের একটি বড় মাধ্যম হিসেবে দাঁড়িয়েছে। কন্টেন্ট লিখতে পারলে আপনার কাজের অভাব হবে না, যদি আপনি খুঁজে নিতে পারেন। নিচে এই বিষয়ে হালকা জ্ঞ্যান দিচ্ছি:ব্লগিং করে আয়:
কন্টেন্ট লিখতে পারলে আপনি নিজে একটা ওয়েবসাইট খুলে নিজেই লেখালেখি করে অ্যাডসেন্স, অ্যাফিলিয়েট অথবা ভিন্ন কোন উপায়ে আয় করতে পারবেন। নিজের ব্লগ না থাকলে অন্যের ব্লগে লিখেও আয় করতে পারবেন। এমন অনেক ওয়েবসাইট আছে যাদের আর্টিকেল লিখে দিলে টাকা প্রদান করে। ওয়েবসাইট তৈরি করে আয় করার সহজ উপায় জেনে নিয়ে ব্লগিং শুরু করতে পারেন ।কন্টেন্ট রাইটার হিসেবে চাকরি করে আয়:
আপনি কন্টেন্ট রাইটিং এর পারদর্শী হলে চাকরি করে আয় করতে পারবেন। অনেক ডিজিটাল মার্কেটিং বা কন্টেন্ট রাইটিং এজেন্সি আছে যেখানে কন্টেন্ট রাইটার হায়ার করা হয়। আবার অনেক কোম্পানি নিজেরাই নিজেদের সোশ্যাল মিডিয়া বা অন্য প্লাটফর্মে প্রতিনিয়ত লেখালেখির জন্য কন্টেন্ট রাইটার নিয়োগ দিয়ে থাকে।কন্টেন্ট রাইটার হিসেবে ফ্রিল্যান্সিং করে আয়:
কন্টেন্ট রাইটিং শেখার পর আপনি ইচ্ছে করলে ফাইবার, ফ্রিল্যান্সার, আপওয়ার্ক ইত্যাদি ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসগুলোতে অ্যাকাউন্ট তৈরি করে সেখানে বিভিন্ন ক্লায়েন্টের কন্টেন্ট লিখে বেশ ভালো টাকা আয় করতে পারবেন। তবে এজন্য আপনাকে আপডেট থাকতে হবে আর কাজে লেগে থাকতে হবে। কন্টেন্ট রাইটিং সেবা দিয়ে আপনি একটা সোশাল একাউন্ট তৈরি করে কাজ চালিয়ে যেতে পারেন । অথবা আপনি আমাদের নিওটেরিক আইটিতে একজন লেখক হিসেবে যোগ দিতে পারেন ।পত্রিকায় লেখা বা বই প্রকাশ:
আপনার লেখা ভালো হলে বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় লেখালেখি করে আয় করতে পারবেন তাছাড়াও চাইলে আপনি নিজে কোন বই প্রকাশ করে আয় করতে পারবেন।তো এই ছিলো কন্টেন্ট রাইটিং শেখার উপায় ও কন্টেন্ট রাইটিং এর নিয়ম নিয়ে আমাদের আজকের আলোচনা। আপনার যেকোনো প্রশ্ন করে ফেলুন কমেন্টে।