কম্পিউটার ভাইরাস থেকে মুক্তির উপায় | এন্টিভাইরাস সফটওয়্যার এর কাজ
সাইবার নিরাপত্তা নিয়ে কথা উঠলে সবচেয়ে বেশি আলোচনা হয় কম্পিউটার ভাইরাস থেকে মুক্তির উপায় নিয়ে। ভাইরাস মাত্র ই ক্ষতিকর - হোক সেটা মানব দেহের ভাইরাস বা কম্পিটারের । তাই আমাদের কম্পিউটার ভাইরাস সম্পর্কে বিষদ ভাবে জানতে হবে ।
আপনি Windows, Mac, Linux যে অপারেটিং সিস্টেম বা ডেস্কটপ, ল্যাপটপ, স্মার্টফোন বা ট্যাবলেটে থাকুন না কেন, আপনি কম্পিউটার ভাইরাসের কারনে সব সময় ই সাইবার হুমকির মুখে থাকেন ।
কম্পিউটার ভাইরাস থেকে মুক্তির উপায় খুঁজতে গেলে আমাদের প্রথমেই জানতে হবে কম্পিউটার ভাইরাস কি ? এটার গতি-প্রকৃতি, আক্রমণের ধরণ–লক্ষণ, তারপর আসবে প্রতিকার-প্রতিরোধ। চলুন ছোট করে কম্পিউটার ভাইরাসের জন্মপঞ্জি টা জেনে নেই।
কম্পিউটার ভাইরাস কি ?
সহজ করে বলি– কোভিড-১৯ যেমন অযাচিত ভাবে শরীরে ঢুকে আস্তে আস্তে পুরো শরীরের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে মানুষের শরীর কে দ্রুত অক্ষম করে ফেলে তেমনি কম্পিউটার ভাইরাস হলো এমন কিছু অনাকাঙ্খিত প্রোগ্রামিং কোডের অংশ যেগুলো কম্পিউটারে প্রবেশ করে তার নিজের প্রতিলিপি তৈরি করতে থাকে এবং কম্পিউটারের সাথে সংযুক্ত যেকোনো ড্রাইভে থাকা ফাইল সংক্রামিত করে এটির কার্যক্ষমতাকে ধীর করে দিতে পারে এবং খুব দ্রুত পুরো সিস্টেম কেই অচল করে দেয়। ভাইরাসগুলি প্রোগ্রাম বা ফাইলগুলিতে তাদের নিজস্ব কোড ইনজেক্ট করে কম্পিউটারে থাকা ব্যাক্তিগত, সংবেদনশীল তথ্য মুছে ফেলে বা ডেটা চুরি করে অসাধু প্রগ্রামার/হ্যাকারদের হাতে তুলে দিয়ে আপনাকে ক্ষতিগ্রস্থ করতে পারে ।
ভাইরাসের প্রকারভেদ
কম্পিউটার ভাইরাসের রয়েছে বৈচিত্রপূর্ণ প্রকারভেদ ।
চলুন জেনে নেয়া যাক ঃ
১।Boot Sector Virus: এ ভাইরাস টি মাস্টার বুট রেকর্ড (MBR) কে সংক্রামিত করে স্টার্টআপের সময় মেমরিতে লোড হয় এবং ইমেইল এটাচমেন্টের মাধ্যমে কম্পিউটারে প্রবেশ করে ।
Elk Cloner,Stoned,Parity Boot,Brain,Michelangelo প্রভৃতি Boot Sector Virus এর উল্লেখযোগ্য উদাহরণ ।
২।Direct Action Virusঃএটি একটি নির্দিষ্ট ধরণের সাধারণত .COM বা .EXE ফাইলের চারপাশে ছড়িয়ে পড়েএবং যখন সেগুলিকে আক্রান্ত করে নিজেরা ভ্যানিশ হয়ে যায়। এদের ভেতর Win64.Rugrat,Vienna virus এর নাম বলা যায় ।
৩।Resident Virusঃ এ ভাইরাসগুলি কম্পিউটারের প্রাথমিক মেমরিতে (RAM) বাসা বাধে এবং সহজে রিমুভ হতে চায় না। Jerusalem virus (a.k.a. Friday 13th virus),Onehalf virus,Magistr virus, Resident Virus এর ভেতর অন্যতম।
৪।Multipartite Virusঃ এই বহুমুখী ভাইরাসগুলো সময়ের সাথে দ্বিগুন গতিতে কম্পিউটারের ফাইল ,বুট স্পেসে ছ ড়িয়ে পড়ে সেগুলোকে মুছে দিয়ে ক্রমাগত শক্তিশালী হতে থাকে।Junkie virus,Tequila virus Multipartite Virus এর উল্লেখযোগ্য উদাহরণ ।.
৫।Polymorphic Virusঃ কম্পিউটারের ফাইল কে আক্রান্ত করার পর এরা নিজেদের আকৃতি পরিবর্তন করে ফেলে বলে শনাক্ত করা কঠিন হয়ে পড়ে।এদের ভেতর Satanbug,VirLock প্রভৃতির নাম উল্লেখ করা যায়।
৬।Macro Virusঃম্যাক্রো ভাষায় লিখিত এসব ভাইরাস মাইক্রোসফ্ট ওয়ার্ডের মতো ম্যাক্রো মিনি-প্রোগ্রামগুলিকে আক্রান্ত করে ।এর অন্তর্ভুক্ত Melissa ভাইরাস টি কম্পিউটারের মাইক্রোস্ফট এর মেইল ক্লায়েন্টে প্রবেশ করে র্যান্ডামলি মেইল সেন্ড করতে থাকে ।
এ ছাড়াও Trojans,Spyware,Worms,Ransomware,Adware, Bots,Adware, প্রভৃতি ভাইরাস এদের স্বনামে কুখ্যাত ।
কম্পিউটারে ভাইরাস কিভাবে ছড়ায়ঃ
ভাইরাস কম্পিউটারে ঢুকে নিজস্ব প্রতিলিপি তৈরি করে ইমেইল এটাচমেন্ট এবং ক্ষতিকর লিংক এর মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে এবং আপনার পিসি তে থাকা কন্ট্যাক্ট দের অটো মেইল পাঠাতে যাতে করে সেসব ডিভাইস ও ইনফেক্টেড হয়।
- ইমেল হল সবচেয়ে জনপ্রিয় ম্যালওয়্যার ডেলিভারি পদ্ধতিগুলির মধ্যে একটি, যে কারণে ইমেল নিরাপত্তা গুরুত্বপূর্ণ।
- অনেক সময় .com, .exe, .zip, .dll, .pif, .vbs, .js, .scr মত নিরীহ দর্শন পোগ্রাম ফাইল বা .doc, .dot, .xls, .xlt, xlsm, .xsltm এর মত ম্যাক্রো ফাইল ওপেন করার সাথে সাথে কম্পিউটার ভাইরাসাক্রান্ত হতে পারে।কিছু ভাইরাস ইমেইলের HTML বডিতে সংযুক্ত থাকতে পারে ।
- Instant chatting এর সময় Skype, Facebook Messenger, Windows Live Messenger এর মত এপ্স গুলতে ইনফেক্টেট লিংক শেয়ার করলে আপনার অজান্তেই ছড়িয়ে পড়ে ভাইরাস
- Dropbox, SharePoint / ShareFile এর মত Peer-to-peer ফাইল শেয়ারিং সার্ভিসগুলোর মাধ্যমেও ভাইরাস ছড়িয়ে যায় ।আমরা যখন Apple-এর অ্যাপ স্টোর বা Google Play-এর বাইরে কোনো অখ্যাত উৎস থেকে কোনো অ্যাপ ডাউনলোড করি, তখন সেটি ক্ষতিকারক সফ্টওয়্যার বা ব্লোটওয়্যার দিয়ে আক্রান্ত হতে পারে।
- স্ক্যামার ও সাইবার ক্রিমিনাল রা Fake antivirus এর মত virus-loaded software এর মাধ্যমে পপ-আপ এবং বিজ্ঞাপন ব্যবহার করে অস্তিত্বহীন কোন ভাইরাসের ভয় দেখিয়ে ইউজারকে সো কল্ড "অ্যান্টিভাইরাস" সফ্টওয়্যার ডাউনলোড করতে বাধ্য করে।, মূলত এই নকল অ্যান্টিভাইরাসটি কম্পিটারেকে ভাইরাস মুক্ত করার বদলে পিসিকে ম্যালওয়্যার দ্বারা সংক্রমিত করে।
- software এবং apps –যেগুলো অনেকদিন আপডেট করা হয়নি যেমন Adobe Reader, Java, Microsoft Windows or Microsoft Office ইত্যাদি Unpatched software এর পুরনো ভার্সান গুলোকে পেনিট্রেট করার জন্য আজকাল অনেক আপডেটেড সফটওয়্যার বেরিয়ে গেছে।যেগুলো অপারেটিং সিস্টেমের এক্সেস পেতে ও ম্যালওয়্যার ছড়িয়ে দিতে ব্যাবহৃত হয় ।
- পেন ড্রাইভের মত অফ লাইন ডিভাইসে ভাইরাস অটোরান ফাইল তৈরি করে যার ফলে পেনড্রাইভ প্রবেশ এর সাথে সাথে ফাইলটি রান হয়ে যায়।যখন অন্য কোন কম্পিউটারে এই পেনড্রাইভ প্রবেশ করানো হয় তখন স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভাইরাসটি পিসিতে রান হয় এবং এর সংস্পর্শে আসা সব ডিভাইস কে আক্রান্ত করে ফেলে।
কম্পিউটার ভাইরাস আক্রমণের লক্ষণঃ
ভাইরাস আক্রান্ত কম্পিউটার টি তে যেসব লক্ষণ প্রকাশ পায়
- কম্পিটারটি খুব স্লো হয়ে যায় ।
- সি পি ইউ ইউজ বৃদ্ধি পায়।
- অপরিচিত প্রোগ্রাম অথবা এপ্স শো করে
- অ্যান্টি ভাইরাস ওপেন অথবা আপডেট করা যায় না।
- এডমিন প্যানেল কে এক্সেস করা যায় না ।
- উইন্ডোজ চালু হওয়ার সময় নিয়ন্ত্রণ হীন ভাবে পপ আপ চলতে থাকে ।
- এমন সব সেটিংস পাওয়া যায় যা সম্পর্কে আপনি হয়তো ওয়াকিবহাল নন।
- করাপ্ট বা মুছে যাওয়া ফাইল গুলো আবার জ্যান্ত হয়ে যায়।
- হার্ড ড্রাইভ টি স্বয়ংক্রিয়ভাবে চালু হতে থাকে ।
- কম্পিউটার খুব দ্রুত অস্বাভাবিক গরম হয়ে যায় ।
- ফাইল ইঙ্কিপ্ট হয়ে যায়
- অকারণে রিস্টার্ট নেয়,
- বিভিন্ন এড শো করে
উপরে উল্লেখিত উপায় গুলোতে যখন ভাইরাস আপনার ডিভাইসে ছড়িয়ে পড়ে তখন তাৎক্ষনিক ভাবে আপনি কি ব্যবস্থা নেবেন? চলুন জেনে নেয়া যাক ।
কম্পিউটারকে ভাইরাস মুক্ত করবেন যেভাবে - এন্টিভাইরাস সফটওয়্যার এর কাজ
কম্পিউটার ভাইরাস প্রায় সময়ই অদৃশ্য থাকে। অ্যান্টি-ভাইরাস সুরক্ষা ছাড়া আপনি এর অস্তিত্ব ই খুঁজে পাবেন না । । এই কারণেই আপনার সমস্ত ডিভাইসে অ্যান্টি-ভাইরাস ইনস্টল করা জরুরী ।বাহ্যিক লক্ষন বা অ্যান্টি-ভাইরাসের সাহায্যে আপনি যখন ভাইরাসের অস্তিত্ব সম্পর্কে নিশ্চিত হবেন তখন ধাপে ধাপে আপনার পিসিকে ভাইরাস মুক্ত করুন।
১ম ধাপ - অ্যান্টিভাইরাস ডাউনলোড ও ইনস্টল করুন
দুটি প্রধান অ্যান্টিভাইরাস সফ্টওয়্যার রয়েছে যা কম্পিউটার ভাইরাস সনাক্ত এবং অপসারণ করতে পারে:
- রিয়েল-টাইম
- অন-ডিমান্ড
আপনার কম্পিউটার ব্যবহার করা অবস্থায় রিয়েল-টাইম ম্যালওয়্যার স্ক্যানার ভাইরাসগুলি স্ক্যান করে এবং একটি অন-ডিমান্ড স্ক্যানার, যেমন মাইক্রোসফ্ট ডিফেন্ডার, আপনি যখনই ম্যালওয়্যার পরীক্ষা করতে চান তখন চালু করতে হয় ।নতুন ধরনের ভাইরাস হুমকি থেকে সম্পূর্ণ সুরক্ষা পেতে রিয়েল-টাইম ম্যালওয়্যার স্ক্যানার বেশি উপযোগী। এটাই এন্টিভাইরাস সফটওয়্যার এর কাজ ।
২য় ধাপ - একটি ভাইরাস স্ক্যান চালান
কম্পিউটারে অ্যান্টিভাইরাস ইনস্টল করার পরে, আপনাকে একটি সম্পূর্ণ ভাইরাস স্ক্যান চালিয়ে যেকোনো ম্যালওয়ারের জন্য আপনার কম্পিউটার স্ক্যান করতে হবে।যাতে উইন্ডোজে লুকিয়ে থাকা কোনো ক্ষতিকারক কোড খুঁজে পাওয়া যায় ।
৩য় ধাপ - ইন্টারনেট সংযোগ বিচ্ছিন্ন করুন
পিসিকে ভাইরাস বুক্ত করার সময় ভাইরাসের বিস্তার রোধে এই ধাপে আপনার ইন্টারনেট সংযোগ বন্ধ করুন কারণ অনেক ভাইরাস বংশ বৃদ্ধির জন্য ইন্টারনেট কে ব্যাবহার করে ।
৪র্থ ধাপ ঃসেফ মোডে কম্পিউটার কে রিবুট করুনঃভাইরাস অপসারণ করার সময় আপনার কম্পিউটারকে সুরক্ষিত করতে, এটিকে ‘সেফ মোডে' রিবুট করুন।সেফ মোডে আপনার উইন্ডোজে ডিফল্ট সেটিং এ সীমিত সংখ্যক ফাইল ,ড্রাইভ ওপেন থাকে।সেফ মোডে কোনো প্রব্লেম না থাকলে ধরে নেয়া যায় যে আপনার ডিভাইসের বেসিক সেটিং এ কোনো ইস্যু নেই।সেফ মোডের দুটি ভার্সান রয়েছে
- Safe Mode
- Safe Mode with Networking.
Settings,sign-in screen থেকে Safe Mode এ যাওয়ার ধাপ গুলো হলো ঃ
Safe Mode এ যাওয়ার ধাপ
- আপনার পিসি বন্ধ ক রুন–আবার চালু করুন।
- স্ক্রিনে এ লাইট আসার পর ‘Advanced boot options’ আনতে f8 চাপুন।Safe Mode with Networking. এ ক্লিক করুন
- ইন্টারনেট সংযোগ বিচ্ছিন্ন রাখুন।
৫ম ধাপ - যেকোন অস্থায়ী ফাইল মুছে ফেলুন
ভাইরাস সংক্রমনের কারণ হতে পারে সম্প্রতি ডাউনলোড করা এমন ফাইল গুলো রিমুভ করুন ।
উইন্ডোজ ১০ এ সেফ মোডে থেকে temporary faile গুলোকে যেভাবে ডিলিট করবেনঃ
- ডান দিকে নিচে Windows logo তে ক্লিক করুন
- “Temporary Files” টাইপ করুন
- “Free up disk space by deleting unnecessary files” সিলেক্ট করুন
- ডিস্ক ক্লিনআপ তালিকায় ‘Files to delete’এ “Temporary Internet Files” সিলেক্ট করুন
- “Delete Files” এ ক্লিক করুন
যেসব ভাইরাস কে আপনার পিসি স্টার্ট করার সাথে এটাক করার জন্য তৈরি করা হয়েছে ,“Temporary Files” ডিলিট করলে সেগুলো রিমুভ হতে পারে।
৬ষ্ঠ ধাপ - Boot-time scan করুন
Temporary file delete করার পরেও যদি ভাইরাস না যায় তখন আপনাকে Boot-time scan চালু করতে হবে।boot-time scan একটি উন্নত মানের এন্টি ভাইরাস যা অপারেটিং সিস্টেম এবং অন্যান্য প্রোগ্রাম boot up হওয়ার আগে system-level malwareকে root outকরার জন্য ডিজাইন করা হয়
boot-time scan চালানোর জন্য আপনার antivirus app টি খুলুন ,scans tab অথবা settings এ fix, move to quarantine, or delete অপশান দেখতে পাবেন।
boot-time scan সেট আপের পর আপনি যখন পিসি রিস্টার্ট দেবেন তখন এন্টিভাইরাস অটোমেটিক্যালি যেকোন ভাইরাস থ্রেটের জন্য আপনার পিসিকে স্ক্যান করবে।
৭ম ধাপ - infected file গুলোকে Delete অথবা quarantines করুন
পিসি স্ক্যান করার পরে এন্টি ভাইরাসের মাধ্যমে যদি কোন ভাইরাস খুজে পাওয়া যায় তাহলে ফাইল টি মুছে ফেলতে ‘Delete’ or ‘Quarantine’ সিলেক্ট করুন ।
যাতে ভাইরাস টি অন্য কোন ফাইল কে আক্রান্ত করতে না পারে
কম্পিউটারকে নিশ্চিতভাবে ভাইরাস মুক্ত করতে আবার স্ক্যান
করুন
৮মঃ আপনার কম্পিউটার কে রিবুট করুন
এখন আশা করা যায় যে আপনার পিসি ভাইরাস মুক্ত হয়েছে তাই এটাকে সেফ মোড ছাড়াই রিস্টার্ট দিন
৯ম ধাপ - আপনার সব পাসওয়ার্ড বদলে ফেলুন
যেহেতু আপনার কম্পিউটার টি আক্রান্ত হয়েছিল তাই আমরা ধরে নিতে পারি যে আপনার পাসওয়ার্ড গুলো আর নিরাপদ নয় ।তাই এগুলো বদলে ফেলে পিসি,software, browser and operating system এর সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করুন।
১০ম ধাপ - আপনার software, browser এবং operating system কে আপডেট করুন
আপনার software, browser এবং operating system কে আপডেট করলে এটি আপনার ডিভাইসে সাইবার ক্রিমিনাল দের ইন্সটল করা কোডের ঝুঁকি কে কমিয়ে আনবে
এগুলো তো গেল উইন্ডোজের ব্যাপার – Mac user রা হয়তো ভাবছেন যে তারা ভাইরাসের হাত থেকে নিরাপদ– কিন্তু বিপদের কথা হলো যে তাদের পিসিও বিপদের আওতামুক্ত নয় ।তাদের ডিভাইস ও adware, trojan horses, spyware, এর মত ম্যাল ওয়্যার আক্রমনের শিকার হতে পারে।ম্যাক ভাইরাস গুলো অনেক সময় ই এন্টি-ভাইরাস প্রডাক্টস এর লেবাস ধরে থাকে,আপ্নি সেগুলো ডাউনলোড বা ক্লিক করলেই বু–ম,এই ধরনের ম্যাক ভাইরাসের উদাহরণ হল 'ম্যাকডিফেন্ডার', 'ম্যাকপ্রোটেক্টর' এবং 'ম্যাকসিকিউরিটি'। ভাইরাস থেকে মুক্তির পাশাপাশি নতুন ব্যবসা শুরু করার আইডিয়া নিয়ে নিন ।
Mac কম্পিউটারকে ভাইরাস মুক্ত করবেন যেভাবে
আপনার Mac এ যদি ভাইরাস থেকে তবে অবশ্য ই এটাকে সম্পূর্ণভাবে নির্মুল করতে হবে ।
- যে সফট ওয়্যার বা অ্যাপ্স গুলো আক্রান্ত বলে মনে হচ্ছে সেগুলোকে রিমুভ করুন।
- ‘Activity monitor’এ 'ম্যাকডিফেন্ডার', 'ম্যাকপ্রোটেক্টর' এবং 'ম্যাকসিকিউরিটি' এর মত ম্যাক থ্রেট গুলোকে খুঁজুন ।
- যদি তাদের খোঁজ পান তবে ‘Activity monitor’. থেকে বের হওয়ার আগেই ‘Quit process’ এ ক্লিক করুন।
- এর পর ‘Applications’ ফোল্ডারে গিয়ে ফাইল টিকে ট্র্যাশ এ ফেলুন।
- ভাইরাস টিকে স্থায়ীভাবে নির্মূল করতে আপনার ‘ ট্র্যাশ ‘ খালি করতে ভুলবেন না ।
- আপনার সফটওয়্যার , অ্যাপ্স গুলোকে সব সময় আপডেটেড রাখবেন।
এতক্ষন তো কম্পিউটার কে ভাইরাস মুক্ত করলেন এখন সেটি যেন আর আক্রান্ত না হয় সেজন্য কিছু প্রতিরোধ মূলক ব্যাবস্থা তো নিতে হবে,তাই না ?
কম্পিউটার কে ভাইরাস মুক্ত রাখতে প্রতিরোধ মূলকব্যাবস্থাঃ
✔✔ অবশ্যই অবশ্যই আপনার কম্পিউটারে একটি ভালোমানের এন্টি ভাইরাস এক্টিভ রাখুন এবং নিয়মিতো সেটিকে আপডেট করুন এবং আপনার পিসিকে স্ক্যান ক রান। অপারেটিং সিস্টেম হিসাবে যদি উইন্ডোজ ১০ ইউজ করেন তবে একটু সতর্ক থাকলে এর ডিফেন্ডারের থেকেও ভাইরাসের বিরুদ্ধে ভালো সার্ভিস পাওয়া সম্ভব ।
✔✔ নির্ভরযোগ্য কোন সাইট ছাড়া কম্পিউটারের জন্য কোন সফটওয়ার বা অ্যাপ্স কিনবেন না ,কোন ডিজিটাল প্রডাক্ট কেনার আগে ,অবশ্য ই ডেভেলপারদের রিভিউ দেখে নেবেন। ক্রাক সফটওয়ার থেকে শত হাত দূরে থাকুন।
✔✔ স্প্যাম ইমেইলে পাওয়া কোন এটাচমেন্ট, মেসেজ বা সাইটে ভুলেও ক্লিক করবেন না ।
✔✔ পাব্লিক ওয়াইফাই বা শেয়ার্ড আই পি ব্যাবহারের ক্ষেত্রে ভালো মানের VPN ব্যাবহার করুন।
✔✔ পপ আপ এড এ ক্লিক করবেন না কারণ বেশির ভাগ সময় এগুলো অটো ক্লিক এর মাধ্যমে আপনাকে এমন সব এক্সটেনশান এ কানেক্ট করিয়ে নেবে যার মাধ্যমে আপানার পিসিতে ভাইরাস ছড়িয়ে পড়বে ।
✔✔ আপাতদৃষ্টে লোভনীয় বিজ্ঞাপন গুলো এড়াতে এড ব্লকার ব্যাবহার করতে পারেন ।
✔✔ আপনার ব্রাউজিং হিস্ট্রি ক্লিন রাখুন। আজেবাজে কন্টেন্টের সাইট ব্রাউজ করা থেকে বিরত থাকুন–এগুলো মূলত ভাইরাসের আখড়া ।
✔✔ কারো কথায় প্ররোচিত হয়ে কোন লিংকে ক্লিক করবেন না কারণ হতে পারে এগুলো কোন ফিসিং সাইট বা ভাইরাস ফাইল ।
✔✔ হুট করে যেকোন পেন ড্রাইভ, মেমোরি কার্ডের মত USB Stick পিসিতে insert করাবেন না। অবশ্য ই-ডিভাইস টিকে এন্টি ভাইরাস দিয়ে স্ক্যান করিয়ে নেবেন ।
✔✔ পেন ড্রাইভ ওপেন করতে ডাবল ক্লিক না করে My Computer এর Address Bar এ গিয়ে তারপর এট খুলবেন। পেন ড্রাইভে যদি এমন কোন ফাইল থাকে যেটি আপনার অচেনা তবে অবশ্য ই সেটি ডিলিট করে দিন।
✔✔ কম্পিউটারের অটোরান সিস্টেম ডিজেবল রাখুন এতে ফ্ল্যাশড্রাইভের ভাইরাস কম্পিউটারে স্বয়ংক্রিয়ভাবে চালু হতে পারবে না।
✔✔ বিভিন্ন প্রোগ্রাম/ফাইল/ভিডিও এর এক্সটেনশন (.doc, .docx, .mp3, .amr, .avi, .mp4, .3gp etc.) সম্পর্কে আপডেটেড থাকুন যাতে অস্বাভাবিক কোন ফাইল বা কন্টেন্টের ব্যাপারে সতর্ক থাকতে পারেন ।
সবশেষ কথা , শত্রুর (ভাইরাসের ) হাত থেকে বাঁচতে তাকে ভালো করে জানুন , তার সব গতিবিধি নখ দর্পনে রাখুন । তহলেই আপনি কম্পিউটার , ম্যাক, এন্ড্রইয়েড, আইফোন যাই ই বলুন তাকে সুরক্ষিত রাখতে পারবেন ।