কিসমিস খাওয়ার নিয়ম ও উপকারিতা - kismis er upokarita

কিসমিস খাওয়ার রয়েছে অসাধারণ উপকারিতা। শরীরে আয়রনের ঘাটতি দূর করার পাশাপাশি কিসমিস রক্তে লাল কণিকার পরিমাণ বাড়িয়ে থাকে। তাছাড়া যারা নিয়মিত কিসমিস ভেজানো পানি খেয়ে থাকেন তাদের রক্ত পরিষ্কার থাকে।কিসমিসে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এবং খনিজ উপাদান। কিসমিসে আরো রয়েছে প্রাকৃতিক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা যেকোনো রোগ থেকে মুক্তির জন্য সাহায্য করে থাকে। কিসমিস নানান ধরনের রোগে ব্যবহার করা হয়।আজকের আর্টিকেলের মাধ্যমে আমরা জানতে পারবো কিসমিস খাওয়ার নিয়ম ও কিসমিস খাওয়ার উপকারিতা । 

কিসমিস খাওয়ার নিয়ম ও উপকারিতা - kismis er upokarita - NeotericIT.com

কিসমিস খাওয়ার নিয়ম ও উপকারিতা - kismis er upokarita - NeotericIT.com

কিসমিস খাওয়ার উপকারিতা

কিসমিস হচ্ছে আমাদের শরীরের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি উপাদান। নিয়মিত কিসমিস খাওয়ার ফলে আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা যেমন বৃদ্ধি পেয়ে তেমনি আমাদের শরীর থাকে সুস্থ।

নিয়মিত কিসমিস খাওয়ার ফলে আমাদের শরীরের কোন ধরনের উপকার গুলো সাধন হয়ে থাকে বা কিসমিসের উপকারিতা কি কি তা নিচে দেওয়া হল:

১.উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে কিসমিসের উপকারিতা

যাদের হাই ব্লাড প্রেসার বা উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা রয়েছে তাদের জন্য কিসমিস হতে পারে দারুন একটি উপাদান। যারা প্রাকৃতিকভাবে উচ্চ রক্তচাপ দূর করতে চান তারা নিয়মিত কিসমিস খেতে পারেন। কিসমিসের ভেতরে থাকা পর্যাপ্ত পরিমাণে পটাশিয়াম আমাদের ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রণে রাখে।

২.হজম শক্তি বৃদ্ধি করে থাকে

সকালে কিসমিস খাওয়ার উপকারিতা বা যারা খালি পেটে কিসমিস খেয়ে থাকেন তারা আশ্চর্য কিছু উপকার পাবেন। হজম শক্তি  উন্নত করতে সাহায্য করে থাকে কিসমিস। যাদের হজম শক্তি খুবই দুর্বল তারা রোজ রাতে এক গ্লাস পানির সাথে কিসমিস ভিজিয়ে রাখুন। পরের দিন ভোরবেলা ঘুম থেকে উঠে সেই কিসমিস পানি খেয়ে নিন। এভাবে কিছুদিন খাওয়ার ফলে আপনার হজম শক্তির উন্নতি হওয়া শুরু করবে।

৩.রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে কিসমিসের উপকারিতা

আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা যদি ভালো না হয় তাহলে শরীর ঘন ঘন অসুস্থ হয়। অর্থাৎ শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা যদি ভালো থেকে থাকে তাহলে শরীর যেকোনো রোগের বিরুদ্ধে খুব সহজেই যুদ্ধ করতে পারে। তাই শরীরের সঠিক রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা থাকা খুবই জরুরী। তাই যাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল তারা নিয়মিত কিসমিস পানি খাওয়ার অভ্যাস করতে পারেন। কেননা কিসমিসের রয়েছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যার শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে থাকে।

৪.কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দূর করে থাকে

যাদের কোষ্ঠকাঠিন্য রয়েছে তারা নিয়মিত কিসমিস খেতে পারেন। কেন নিয়মিত কিসমিস খাওয়ার ফলে কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা অনেকটা দূর করা যায়। যারা নিয়মিত পেটের সমস্যায় ভুগে থাকেন তারা সকালে খালি পেটে ভেজা কিসমিস খেতে পারে। তাই কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে প্রতিদিন কিসমিস খেতে পারেন।

৫.রক্তস্বল্পতার সমস্যা থেকে মুক্তি দিয়ে থাকে

যারা রক্তস্বল্পতার সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে চান তারা কিসমিস খেতে পারেন। কেননা রক্তস্বল্পতা কমাতে কিসমিস হচ্ছে যথেষ্ট উপকারী একটি উপাদান। নিয়মিত কিসমিস খাওয়ার ফলে রক্তে হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ বেড়ে থাকে যার ফলে রক্তস্বল্পতা সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। তারা কিসমিসের ভিতরে রয়েছে তামা যা আমাদের রক্তে লাল রক্ত কণিকা তৈরি করতে সাহায্য করে থাকে।

৬.ওজন বাড়াতে কিসমিসের উপকারিতা

যাদের শরীরের ওজন অনেক কম এবং ওজন বাড়ানোর জন্য অনেক কিছু করেছেন তারা কিসমিস খাওয়ার অভ্যাস করতে পারেন। যারা স্বাস্থ্যকর উপায়ে ওজন বাড়াতে চান তাদের জন্য কিসমিস হতে পারে দারুন একটি উপাদান। কিসমিসে রয়েছে ফুকটোজ এবং গ্লুকোজ যা সাধারনত শরীরকে পর্যাপ্ত পরিমাণে শক্তি লুকিয়ে থাকে। তাই স্বাস্থ্যকর ভাবে ওজন বাড়াতে কিসমিস খেতে পারেন।

সকালে কিসমিস খাওয়ার উপকারিতা

সকালে কিসমিস খাওয়ার উপকারিতা জানুন ঃ কিসমিস খাবার রয়েছে অসংখ্য উপকারিতা ইতিমধ্যে জেনে গিয়েছেন। যারা কিসমিস খাওয়ার সর্বোচ্চ উপকারিতা পেতে চান তারা সকালে কিসমিস খেতে পারেন। কেননা সকালে খালি পেটে কিসমিস খেলে আমাদের শরীর অনেক ধরনের উপকারিতা পেয়ে থাকে। হজম শক্তি বৃদ্ধি থেকে শুরু করে, রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ, শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থ বের, কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দূর আরো অনেক সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।

মধু ও কিসমিস খাওয়ার উপকারিতা

মধু এবং কিসমিস একসাথে খেলে আমাদের শরীর এর সর্বোচ্চ উপকারটা পাবে। মধু এবং কিসমিসে মধ্যে এমন কিছু গুণ থাকে যা আমাদের শুক্রাণু গুণগতমান বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে থাকে। অধিকাংশ পুরুষের প্রোস্টেট   ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা থাকে কিন্তু মধু এবং কিসমিসে থাকা অ্যান্টি ক্যান্সার উপাদান আমাদের শরীরের যে কোন স্থানে ক্যান্সার আক্রান্ত কোষ সৃষ্টিতে বাধা দিয়ে থাকে। তাছাড়া নিয়মিত মধু ও কিসমিস খেলে আমাদের শরীরের পেশী এবং কোষ অনেক মজবুত হয়ে থাকে।

দুধ কিসমিস খাওয়ার উপকারিতা - সেক্সে কিসমিসের উপকারিতা

সেক্সে কিসমিসের উপকারিতা বা যারা যৌন শক্তি বৃদ্ধি করতে চান তারা নিয়মিত দুধ কিসমিস খাওয়ার অভ্যাস করতে পারেন। কিসমিসে রয়েছে আর্জিনিন নামের এক ধরনের উপাদান যা স্পার্মের চলাচলে সাহায্য করে থাকে। তাই যাদের যৌনসহনশীলতা অনেক কম তারা প্রতিদিন দুধ কিসমিস খাওয়ার অভ্যাস করতে পারেন। সেক্সে কিসমিসের উপকারিতা ও কিসমিস খাওয়ার উপকারিতা এতটুকুই । 

খেজুর ও কিসমিস খাওয়ার উপকারিতা

কিসমিস খেলে আমাদের শরীরের যেমন অনেক উপকার হয় তেমনি খেজুরও আমাদের শরীরের জন্য খুবই উপকারী। এক দুইটি উপাদান যখন একসাথে খাওয়া হয় তখন আমাদের শরীর সর্বোচ্চ উপকারটা পায়। খেজুর এবং কিসমিস একসাথে খেলে ডায়রিয়ার মত সমস্যাগুলো দূরে থাকে এবং কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দূর হয়ে থাকে। তাছাড়া যকৃতের বিভিন্ন ধরনের সংক্রমণ রোধ করতে খেজুর ও কিসমিস খেতে পারেন। সর্দি জ্বর,ঠান্ডা,কাশি আরো অনেক রোগবালাই থেকে দূরে থাকতে নিয়মিত খেজুর কিসমিস খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে পারেন।

কাজু কিশমিশ এর উপকারিতা

কাজু কিসমিস খাওয়ার উপকারিতা,  কিসমিসের মতো কাজু কিসমিসের রয়েছে অনেক ধরনের উপকারিতা। কাজু কিসমিসে রয়েছে প্রচুর পুষ্টিকর উপাদান। কাজু কিসমিসের  ভিতরে রয়েছে ভিটামিন ই, ক্যালসিয়াম, প্রোটিন, কার্বোহাইড্রেট, ফাইবার, ম্যাঙ্গানিজ, ম্যাগনেসিয়াম এবং জিংক। তাহেরা কালু কিশমিশে আরও রয়েছে আয়রন,থায়ামিন এবং ভিটামিন কে সহ পটাশিয়ামের মত উপাদান। তাই নিয়মিত যদি কাল কিসমিস খেতে পারেন তাহলে আপনার শরীরের বিভিন্ন সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।

কিশমিশের ক্ষতিকর দিক

কিসমিসের উপকারিতা ও খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে এতক্ষণে জানা হয়ে গিয়েছে এবার জেনে নিতে হবে কিসমিসির ক্ষতিকর দিকগুলো সম্পর্কে।কিসমিস এমন একটি উপাদান যার ক্ষতিকর তেমন নেই বললেই চলে।কিসমিসে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা সাধারণত আমাদের শরীর সুস্থ রাখতে সাহায্য করে থাকে। কিন্তু কিসমিস খেলে শিশুদের ক্ষতি হতে পারে। অনেকে হয়তো জানেন না নিয়মিত কিশমিশ খেলে শিশুদের দাঁতের মারাত্মক ক্ষতিসাধন হয়ে থাকে। কিসমিসের থাকা অতিরিক্ত চিনি শিশুদের দাঁতের সমস্যার জন্য দায়ী। তাই অবশ্যই শিশুদের কিসমিস খাওয়ানো থেকে বিরত থাকতে হবে। কিসমিস খাওয়ার নিয়ম ও উপকারিতা - kismis er upokarita - NeotericIT.com

কালো কিসমিসের উপকারিতা

কালো কিসমিসের উপকারিতা বা কালো কিসমিস খেলে কি হয় সেটা সম্পর্কে এবার জেনে নেওয়া যাক। কালো কিশমিশ নানান ধরনের পুষ্টিগুণে ভরপুর। কালো কিসমিসে উপস্থিত ক্যালসিয়াম এবং পটাশিয়াম হাড়ের স্বাস্থ্যের জন্য খুবই কার্যকরী ভূমিকা পালন করে থাকে। কালো কিসমিসে উপস্থিত মাইক্রোনিউট্রিয়েন্ট অস্টিওপোরোসিস প্রতিরোধ করতে কাজ করে থাকে। তাছাড়া নিচে কালো

 কিসমিসের কিছু উপকারিতা তুলে ধরা হলো:-

  • কালো কিসমিসে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার যা হজম শক্তির উন্নতি সাধন করে কোষ্ঠকাঠিন্যের মতো সমস্যাগুলোকে দূরে রাখে।
  • কালো কিসমিসে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে আয়রন তাই যাদের রক্তস্বল্পতার সমস্যা রয়েছে তারা কালো কিসমিস খেতে পারেন।
  • কালো কিসমিসে রয়েছে পটাশিয়াম যা সাধারণত আমাদের রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে থাকে।
  • নিয়মিত কালো কিসমিস খাওয়ার ফলে আমাদের রক্ত থেকে ক্ষতিকর টক্সিন বের হয়ে যায় এবং আমাদের রক্ত পরিষ্কার থাকে।


এছাড়াও কালো কিসমিস খাওয়ার আরো অসংখ্য উপকারিতা রয়েছে। তাই সুস্থ থাকতে নিয়মিত কালো কিসমিস খাবার অভ্যাস গড়ে তুলতে পারেন।


Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url