বাংলাদেশের ষড়ঋতু রচনা - six seasons of Bangladesh
বাংলাদেশের ষড়ঋতু রচনা - six seasons of Bangladesh.
আচ্ছালামু আলাইকুম প্রিয় অতিথি - নিওটেরিক আইটি থেকে আপনাকে স্বাগতম । আপনি নিশ্চয় বাংলাদেশের ষড়ঋতু রচনা - six seasons of Bangladesh সম্পর্কিত তথ্যের জন্য নিওটেরিক আইটিতে এসেছেন । আজকে আমি বাংলাদেশের ষড়ঋতু রচনা - six seasons of Bangladesh নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করে এই আর্টিকেল সম্পন্ন করব । বাংলাদেশের ষড়ঋতু রচনা - six seasons of Bangladesh সম্পর্কে আরো জানতে গুগলে সার্চ করুন - বাংলাদেশের ষড়ঋতু রচনা - six seasons of Bangladesh লিখে অথবা NeotericIT.com এ ভিসিট করুন । মোবাইল ভার্সনে আমাদের আর্টিকেল পড়ুন । এই আর্টিকেলের মূল বিষয় বস্তু সম্পর্কে জানতে পেইজ সূচি তালিকা দেখুন। ওয়েব স্টোরি দেখুন
বাংলাদেশের ষড়ঋতু রচনা নিয়ে এসেছি আপনাদের জন্য । আপনারা বাংলাদেশের ষড়ঋতু রচনা লিখে গুগলে সার্চ করে আমাদের ওয়েবসাইটে এসেছেন । এইখানে আর কথা না বলে আমরা সরাসরি বাংলাদেশের ষড়ঋতু রচনা দেখে ফেলু চলুন ।
বাংলাদেশের ষড়ঋতু
সূচনা : বাংলাদেশ ঋতু-বৈচিত্র্যের দেশ। এখানে এক এক ঋতুর এক এক রূপ। ঋতুতে ঋতুতে এখানে চলে সাজ বদলের পালা। নতুন নতুন রঙ-রেখায় প্রকৃতি আলপনা আঁকে মাটির বুকে, আকাশের গায়ে, মানুষের মনে। তাই ঋতু বদলের সাথে সাথে এখানে জীবনেরও রঙ বদল হয়। সে-কারণেই বুঝি কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কণ্ঠে ধ্বনিত হয়ー
জগতের মাঝে কত বিচিত্র তুমি হেー
তুমি বিচিত্র রূপিণী।
ষড়ঋতুর পরিচয় :
পৃথিবীর অধিকাংশ দেশে ঋতুর সখ্যো চারটি হলেও বাংলাদেশ ছয় ঋতুর দেশ। এখানে প্রতি দুই মাস অন্তর একটি নতুন ঋতুর আবির্ভাব ঘটে। ঋতুগুলাে হচ্ছে- গ্রীষ্ম, বর্ষা, শরৎ, হেমন্ত, শীত ও বসন্ত। এরা চক্রাকারে আবর্তিত হয়। আর প্রত্যেক ঋতুর আবির্ভাবে বাপ্পাদেশের প্রকৃতির রূপ ও সৌন্দর্য বৈচিত্র্যময় হয়ে ওঠে।
গ্রীষ্মকাল :
ঋতুচক্রের শুরুতেই আসে গ্রীষ্ম। বৈশাখ-জ্যৈষ্ঠ দুই মাস গ্রীষ্মকাল। আগুনের মশাল হাতে মাঠ-ঘাট পােড়াতে পােড়াতে গ্রীষ্মরাজের আগমন। তখন আকাশ-বাতাস ধুলায় ধূসরিত হয়ে ওঠে। প্রকৃতির শ্যামল-স্নিগ্ধ রূপ হারিয়ে যায়। খাল-বিল, নদী-নালা শুকিয়ে যায়। অসহ্য গরমে সমস্ত প্রাণিকুল একটু শীতল পানি ও ছায়ার জন্য কাতর হয়ে পড়ে। এরই মধ্যে কখনাে হঠাৎ শুরু হয় কালবােশেখির দুরন্ত তাণ্ডব। ভেঙেচুরে সবকিছু তছনছ করে দিয়ে যায়। তবে গ্রীষ্ম শুধু পােড়ায় না, অকৃপণ হাতে দান করে আম, জাম, জামরুল, লিচু, তরমুজ ও নারকেলের মতাে অমৃত ফল।
বর্ষাকাল :
গ্রীষ্মের পরেই মহাসমারােহে বর্ষা আসে। আষাঢ়-শ্রাবণ দুই মাস বর্ষাকাল। দিগ্বিজয়ী যােদ্ধার বেশে বর্ষার আবির্ভাব। মেঘের গুরুগম্ভীর গর্জনে প্রকৃতি থেমে থেমে শিউরে ওঠে। শুরু হয় মুষলধারায় বৃষ্টি। মাঠ-ঘাট পানিতে পরিপূর্ণ হয়ে যায়। প্রকৃতিতে দেখা দেয় মনােরম সজীব। জনজীবনে ফিরে আসে প্রশান্তি। কৃষকেরা। জমিতে ধান-পাটের বীজ রােপণ করে। গাছে গাছে ফোটে কদম, কেয়া, জুই। বর্ষায় পাওয়া যায় আনারস, পেয়ারা প্রভৃতি ফল।
শরৎকাল :
বাতাসে শিউলি ফুলের সুবাস ছড়িয়ে আসে শরৎ। ভাদ্র-আশ্বিন দুই মাস শরৎকাল। এ সময় সাদা মেঘ নীল আকাশে তুলাের মতাে ভেসে বেড়ায়। নদীর তীরে তীরে বসে সাদা কাশফুলের মেলা। বিকেল বেলা মালা গেঁথে উড়ে চলে সাদা বকের সারি। সবুজ ঢেউয়ের দোলায় দুলে ওঠে ধানের খেত। রাতের আকাশে জ্বলজ্বল। করে অজস্র তারার মেলা। শাপলার হাসিতে বিলের জল ঝলমল কলমল করে।
তাই তাে কবি গেয়েছেন一
আজিকে তােমার মধুর মুরতি
হেরিনু শারদ প্রভাতে।
হে মাতঃ বঙ্গ, শ্যামল অঙ্গ
ঝলিছে অমল শােভাতে।
শরতের এই অরূপ রূপের জন্যই শরৎকে বলা হয় ঋতুর রানি।
হেমন্তকাল :
ঘরে ঘরে নবান্নের উৎসবের আনন্দ নিয়ে আগমন ঘটে হেমন্তের। কার্তিক-অগ্রহায়ণ দুই মাস। হেমন্তকাল। প্রকৃতিতে হেমন্তের রূপ হলুদ। শর্ষে ফুলে ছেয়ে যায় মাঠের বুক। মাঠে মাঠে পাকা ধান। কৃষক ব্যস্ত হয়ে পড়ে ফসল কাটার কাজে। সােনালি ধানে কৃষকের গােলা ভরে ওঠে, মুখে ফোটে আনন্দের হাসি। শুরু হয় নবান্নের উৎসব। হেমন্ত আসে নীরবে; আবার শীতের কুয়াশার আড়ালে গােপনে হারিয়ে যায়।
শীতকাল :
কুয়াশার চাদর গায়ে উত্তুরে হাওয়ার সাথে আসে শীত। পৌষ-মাঘ দুই মাস শীতকাল। শীত রিক্ততার ঋতু। কনকনে শীতের দাপটে মানুষ ও প্রকৃতি অসহায় হয়ে পড়ে। তবে রকমারি শাক-সবজি, ফল ও ফুলের সমারােহে বিষন্ন প্রকৃতি ভরে ওঠে। বাতাসে ভাসে খেজুর রসের ঘ্রাণ। ক্ষীর, পায়েস আর পিঠাপুলির উৎসবে মাতােয়ারা হয় গ্রামবাল্লা।
বসন্তকাল :
সবশেষে বসন্ত আসে রাজবেশে। ফাল্গুন-চৈত্র দুই মাস বসন্তকাল। বসন্ত নিয়ে আসে সবুজের সমারােহ। বাতাসে মৌ মৌ ফুলের সুবাস। গাছে গাছে কোকিল-পাপিয়ার সুমধুর গান। দখিনা বাতাস বুলিয়ে দেয় শীতল পরশ। মানুষের প্রাণে বেজে ওঠে মিলনের সুর। আনন্দে আত্মহারা কবি গেয়ে ওঠেন—
আহা আজি এ বসন্তে
এত ফুল ফোটে, এত বাঁশি বাজে
এত পাখি গায়।
উপসংহার : বাংলাদেশে ষড়ঋতুর এই লীলা অবিরাম চলছে। বিভিন্ন ঋতু প্রকৃতিতে রূপ-রসের বিভিন্ন সম্ভার নিয়ে আসে। তার প্রভাব পড়ে বাংলার মানুষের মনে। বিচিত্র ষড়ঋতুর প্রভাবেই বালাদেশের মানুষের মন উদার ও ভালােবাসায় পরিপূর্ণ।
বাংলার এই ঋতুবৈচিত্র্য কেবল প্রকৃতির বুকে নয়,সমান তালে মানব মনে এবং জীবনযাপনের ক্ষেত্রেও প্রভাব ফেলে। গ্রীষ্মের দাবদাহে কিংবা শীতের প্রকোপে যেমন মানব জীবনের গতি রুদ্ধ হয়ে যায়, ঠিক তেমনি অন্যান্য ঋতুগুলিতে জীবনে গতি সঞ্চারিত হয়। গ্রীষ্মের রুক্ষ্মতার পর বর্ষায় দ্বিগুণ উৎসাহে কৃষক মাঠে নেমে পড়ে, ফসল বোনে। হেমন্তে আবার সেই ফসল ঘরে তোলার ধুম লেগে যায়। ঋতুর প্রভাব বাঙালির সংস্কৃতি,কাব্য-সাহিত্য ও সংগীতে বিশেষভাবে পরিলক্ষিত হয়। একেক ঋতু একেক রকম সৌন্দর্যে মোহিত হয়ে কবিরা রচনা করেছেন অসংখ্য কবিতা ও গান। চিত্রশিল্পীরা তাদের চিত্রকর্মে ফুটিয়ে তুলেছেন প্রকৃতির সৌন্দর্য। ঋতুভেদে গ্রাম বাংলার জীবনে উদযাপিত হয় নানারকম পূজা-পার্বণ, মেলা ও উৎসব। অর্থাৎ বাংলাদেশের ষড়ঋতুর পালাবদলের সাথে এ দেশের জনজীবন নিবিড়ভাবে সম্পর্কযুক্ত।
আপনি আসলেই নিওটেরিক আইটির একজন মূল্যবান পাঠক । বাংলাদেশের ষড়ঋতু রচনা - six seasons of Bangladesh এর আর্টিকেলটি সম্পন্ন পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ ধন্যবাদ । এই আর্টিকেলটি পড়ে আপনার কেমন লেগেছে তা অবস্যয় আমাদের কমেন্ট করে জানাবেন । মানুষ হিসেবে না বুঝে কিছু ভুল করতেই পারি , তাই ভুল ত্রুটি ক্ষমা করবেন এবং কমেন্ট করে জানাবেন ।
দয়া করে নীতিমালা মেনে মন্তব্য করুন - অন্যথায় আপনার মন্তব্য গ্রহণ করা হবে না ।
comment url