হও তুুমি পর্দাওয়ালী - pordawali
হও তুুমি পর্দাওয়ালী
হও তুুমি পর্দাওয়ালী - neotericit.com
#হও তুুমি পর্দাওয়ালী।
#লেখাঃ উম্মে হাবিবা সায়মা।
#অন্তিম পর্ব।
আমরা শিশুকে ছোটকাল থেকে যে শিক্ষা দিবো সে সেই শিক্ষায় বড় হবে।আমরা মুসলিম তাই আমাদের কর্তব্য শিশুকে ছোটকাল থেকে ধর্মীয় শিক্ষা দেওয়া।
মারিয়া ভাবে তার ছেলে আরিয়ান ও তো ধর্মের শিক্ষায় দীক্ষিত হতে চাই।ছেলেটি বয়স ৫ বছর হলেও আগে থেকে তেমন কোনো শিক্ষা দেওয়া না হলেও তার মধ্যে ইদানিং দেখা যাচ্ছে ধর্মের প্রতি আগ্রহ। এখন যুগ চলছে আধুনিক তাই আমি এই বিষয়য়টি গুরুত্ব দিই নাই।বরং এটা বলার কারণে আরো বকে ছিলাম।আমি যুগের সাথে তাল মিলাতে গিয়ে নিজেকে চিনতে পারি নাই।লোকে কি বলবে এই ভেবে আমি ছেলেকে ধর্মের গুরুত্ব শিখাই নি।শিখাবো কিভাবে? আমি তো যুগের জন্য অন্ধ ছিলাম।মাহিন আমাকে অনেক বুঝিয়ে ছিলো। কিন্তু আমি বুঝি নাই।এখন আমি আমার ভুল বুঝতে পেরেছি।আমি নিজেকে সংশোধন করবো। আমার ছেলেকে মাদ্রাসায় ভর্তি করিয়ে দিবো। আমি যতই ইংরেজিতে অনার্স,মার্স্টার্স করি না কেনো এই পড়ালেখা দুনিয়ায় থেকে যাবে।এই পড়ালেখার জন্য আমি আমার ধর্মকে চিনি নাই।আল্লাহ্ আমাকে জীবিত রেখছেন এটাই অনেক।আমাকে ভুল শোধরানোর পথ দেখিয়ে দিয়েছেন।আমি আর কাব্যকে কষ্ট দিবো না। নিজেকে পরিবর্তন করবো। নিজেকে ইসলামের শিক্ষায় দীক্ষিত করবো। আতিকা যদি আজকে তার নিজের ভুল বুঝতে পেরে নিজেকে পরিবর্তন করার কথা বলতে পারে তাইলে আমি কেনো পারবো না।হ্যা আমি পারবো।
নাজমিন বলল, মেয়েরা খোলা চুলে মাথায় কাপড় না দিয়ে চুল না ডেকে আর কাপড় পড়েও না পড়ার অবস্থায় থাকে এর জন্যই শাস্তি হবে তা তো আমরা বুঝি না,জানলেও মানি না, না জানলে জানতে চাই না। আতিকা বলল,আগে জানতাম না এখন আমার বোধগম্য আসছে তাই জানি।মাথায় কাপড় না দিলে কি শাস্তি হবে আপু।তখন নাজমিন বলল,মাথায় কাপড় প্রসঙ্গে একটা হাদিস আছে সেটা হচ্ছে।
একদিন হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হযরত আলী ও হযরত ফাতেমা রাদিয়াল্লাহু আনহাকে বলেন,আমি শবে মিরাজের রাত্রে নারীদেরকে দোযখে বিভিন্ন প্রকার আজাবে লিপ্ত দেখেছি।তাদের শাস্তি এতো ভয়ানক ও কঠিন ছিলো যে,তার ভয়াবহতা আজও আমাকে কাঁদাচ্ছে। সে শাস্তির কথা মনে পড়ার কারণেই আমি কাঁদছি।
এরপর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,আমি একজন মহিলাকে দেখলাম তাকে চুল দ্বারা ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে এবং তার মস্তিষ্ক আগুনের তাপে উতরানো ভাতের ন্যায় টগবগ করছে।"একদিকে সে দোযখে, এতোটাই মারাত্মক শাস্তি!আবার চুলের দ্বারা ঝুলে থাকা, কতো কষ্টদায়ক। আর এ শাস্তিতে মস্তিষ্ক দোযখের আগুনের তাপে টগবগ করছে।এটা কতো ভয়ানক ও কষ্টদায়ক শাস্তি।
অতঃপর বললেন,তার এই শাস্তির কারণ হল, মাথা খোলা অবস্থায় সে ঘরের বাইরে যেতো। সে মাথা না ডেকে চুল খোলা রেখে বাইরে পরপুরুষের সামনে চলাফেরা করত।সে কারণে তাকে এই শাস্তি দেওয়া হচ্ছে।
এটা শোনার সাথে সাথে আতিকা মাথায় কাপড় দেয় আর দেহ ঢাকার চেষ্টা করে।মারিয়া অবাক হয় নি,কারণ মাহিন তাকে বলেছিল,মারিয়া মাথায় তুমি হিজাব দিয়েছো বিধায় একটা গোনাহ থেকে বেঁচে গেছো।ফ্যাশনের জন্য হলে গোনাহগার হবে। তাহলে এটাই সেটা।নাজমিন বলল,আমরা পর্দা করবে শুধু নিজেকে আর অন্যকে গোনাহ থেকে বাঁচানোর জন্য নয় বরং পর্দা হচ্ছে আল্লাহর দেওয়া ফরজ বিধান।যা অবশ্যই পালনীয়।আর পর্দা হচ্ছে সার্বক্ষণিক একটি ফরজ কাজ।নামাজ,রোজার কাযা করা যায় কিন্তু পর্দার কাযা আদায় করা যায় না। এটার খেলাফ হলে জাহান্নামের যেতে হবে।অনেকে জানে না বা জেনেও করে না তাদের জন্য শাস্তি রয়েছে।আর যারা জেনেও মানে না তাদের জন্য শাস্তি ভয়ংকর। আপু এই সুন্দর দেহ কবরে এরকম থাকবে না যদি আমরা আল্লাহর দেওয়া বিধান মেনে না চলি।মারিয়া ও আতিকা কান্না করবে এই দশা। তখন আতিকা বলল,আপু একটু হেল্প করবেন প্লিজ?
-কি?
-আপু আমি এখন শপিং মলে গিয়ে পর্দার জন্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী নিতে চাই।আমি তো কোন দিন নিই নাই তাই বলছি এসব নিতে সাহায্য করার জন্য।নাজমিন খুশিতে আতিকাকে জড়িয়ে ধরে।সেইসাথে মারিয়া ও।মারিয়া বলে সেও যাবে তাদের সাথে। সেও কিনবে।তখন আশিকরাসহ সবাই মিলে শপিং মলে চলে যায়।সেখান থেকে প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি নিয়ে যে যার বাসাই চলে যায়।
১বছর পর
আজ আতিকা ও আশিকের বিয়ে।তারা তাদের বিয়ে হযরত মুহাম্মদ (স) এর সুন্নাত মোতাবেক করার চেষ্টা করছে।তারা জানে, হযরত মুহাম্মদ বলেছেন,যে বিয়েতে যত বেশি খরচ কম সে বিয়ে তত বেশি বরকতময়।সে অনুযায়ী করতেছে।কোনো আনন্দ,হৈ-হুল্লুট, বেহায়াপনা ছাড়া আশিক আতিকাকে তার ঘরে নিয়ে আসে।এরিমধ্যে মারিয়া ও মাহিনের কুলজুড়ে একটি মেয়ে আর নাজমিন ও নাহিদের কুলজুড়ে একটি ছেলে জন্মগ্রহণ করে।
নাজমিন আর নাহিদের মাধ্যমে শেষ হয় মাহিনের মারিয়াকে বুঝিয়ে আল্লাহর দেওয়া বিধানের দিকে নিয়ে আসা।
হ্যা সেদিন থেকে মারিয়া,আতিকা,আশিক ও তার ফ্রেন্ডরা নিজেদের মধ্যে পরিবর্তন আনতে শুরু করে।তারা সেদিন থেকে ইসলামের বিধি-বিধান গুলো আস্তে আস্তে পালন করার চেষ্টা করে আর সফল ও হয়।তারা এখন একেকজন প্রাক্টিসিং মুসলিম আর মুসলিমাহ।তারা এখন একে অপরকে নিয়ে সুখে শান্তিতে ইসলামের বিধান মোতাবেক জীবন যাপন করছে।
সমাপ্ত